শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী শিক্ষায় গ্র‍্যাজুয়েটদের দক্ষ হতে হবে। গ্র‍্যাজুয়েটদের এক থেকে দুই শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক হতে পারে। কিন্তু বাকিরা দক্ষতা না থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির বাজারে পিছিয়ে পড়ছে।

রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইইউসি) ৫ম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইআইইউসি ক্যাম্পাসে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব (চ্যান্সেলর মনোনীত) করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে আইআইইউসির সুনাম রয়েছে সারা দেশে। এখানে আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশে পাঠ দান চলে। তিনি শিক্ষার্থীদের কর্ম উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম একটি গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি ছিল। তারা ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করেছে। বর্তমানে যাদের দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ড গঠন হয়েছে তারা অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু অস্থিতিশীলতা থেকে বাঙালির মুক্তির জন্য ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মহীনতা এক নয়। বর্তমান সরকার ইসলামের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। দাওরায়ে হাদীসকে মাস্টার্সের মর্যাদা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, সেখান থেকে পাস করে অনেকে দক্ষতা না থাকার কারণে ভালো চাকরি করতে পারছেন না। তাই তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে মোট ১৫ হাজার ৩৬১ জনকে সনদ বিতরণ করা হয়। এদের মধ্যে স্নাতক পর্যায়ের ৯ হাজার ৪৫৯ জন, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৫ হাজার ৯০২ জন।

চ্যান্সেলর স্বর্ণ পদক দেওয়া হয় ৩৬ শিক্ষার্থীকে। এছাড়া ভাইস চ্যান্সেলর পদক দেওয়া হয় ১৩৭ জন শিক্ষার্থীকে।

আইআইইউসির সমাবর্তনে প্রথমবারের মতো প্রবর্তন করা হয়েছে বোর্ড অব ট্রাস্টি চেয়ারম্যান স্বর্ণ পদক। শরীয়াহ অনুষদের শিক্ষার্থী জোবাইদুন নাহার পান্নাকে এ পদক দেওয়া হয়।

সমাবর্তন বক্তৃতায় ড. আইনুন নিশাত বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় গ্র‍্যাজুয়েটদের বিশেষ বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। যার যে বিষয় ভালো লাগে সেসব বিষয় পড়তে হবে। যেমন আজ যারা ব্যবসায় অনুষদের ডিগ্রি নিয়েছেন তারা অর্থনীতি কিংবা কাছাকাছি কোনো বিষয়ে অধ্যয়ন করতে পারেন।

গ্র‍্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা অতি আধুনিকতার নামে সমাজ ও পরিবারের কথা ভুলে যাচ্ছি। আমাদের বাবা-মা ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য বিশ্বজিৎ চন্দ।

সম্মানিত অতিথি ছিলেন আইআইইউসি উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মছরুরুল মওলা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

কেএম/এসএসএইচ