স্থায়ী ক্যাম্পাস ইস্যুতে আল্টিমেটাম দেওয়া ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত মনিটরিং করবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে অগ্রগতি মনিটরিংয়ে ১৬টি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের নিয়মিত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসির কমিটি গঠনের চিঠিতে বলা হয়েছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভবন নির্মাণ ও শিক্ষক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থানান্তর সংক্রান্ত বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক মতামত প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে একজন আহ্বায়ক, একজন সদস্য সচিব ও বাকি জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তাদের সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত মনিটরিং করে ইউজিসিতে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ইউজিসির পরিচালক (পাবলিকেশন) ড. এ কে এম শামসুর আরেফিন বলেন, অনুমোদনের পর যাদের ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে অথচ এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয়নি তাদের নতুন করে তিন থেকে ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে। সে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভবন ও প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব কমিটির সদস্যরা স্থায়ী ক্যাম্পাস সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দিচ্ছে। গত ৫ জানুয়ারি তারা শান্ত মরিয়ম বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে এসেছে। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেবেন।

এদিকে ইউজিসির পাঠানো চিঠি সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে অগ্রগতি হয়নি চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর মধ্যে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটির নাম রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখানে অধ্যয়নরত সব শিক্ষার্থীর নিয়মিত পাঠদান, পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম চলবে। নতুন করে তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না।

তিন মাসের সময় পেয়েছে ছয় বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন করে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট, সিটি ইউনিভার্সিটি, মিলেনিয়াম ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাদের এ সময়ের মধ্যে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক সব কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও আউটার ক্যাম্পাস বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মানারাত ও স্টেট ইউনিভার্সিটিকে।

ছয় মাসের মধ্যে স্থানান্তর হবে ছয় বিশ্ববিদ্যালয়

এ তালিকায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং পিপলস ইউনিভার্সিটির নাম রয়েছে। এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরবর্তী ছয় মাস পর স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে নতুন করে সময় দেওয়া হয়েছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও আউটার ক্যাম্পাস রয়েছে সেগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে সেখানে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ তালিকায় ব্র্যাক, মানারাতসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ১২ বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হতে হবে। আইন অমান্য করা এমন ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। এসময়ের মধ্যে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করে সব কার্যক্রম সেখানে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে যাদের বিদ্যুৎ সংযোগসহ ইউটিলিটি সমস্যা রয়েছে তাদের তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণাধীন থাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো দ্রুত যাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে তাদের ছয় মাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা শুধু সময় দিয়ে বসে থাকব না, তাদের কাজের অগ্রগতি কোন পর্যায়ে তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে। সে কারণে বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হবে তাদের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এমএম/এসকেডি