শিক্ষার্থীদের আত্মশক্তিতে ভরপুর হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেছেন ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের তোমরা যারা শিক্ষার্থী তোমাদের মধ্যে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। তোমাদের এখন শৃঙ্খল ভাঙার সময়। তোমাদের এখন হার না মানার সময়। তোমরা যা ইচ্ছা তাই কর- ফেসবুক, অনলাইনে থাকো। ইউটিউব দেখ। তাতে আমার বাধা নেই। কিন্তু তোমাকে অবশ্যই প্রতিদিন নির্ধারিত একটি সময় পড়াশোনায় দিতেই হবে।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা কমার্স কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তঃকলেজ ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৩ এর ঢাকা জেলা পর্যায় অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।

ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘জ্ঞান সৃষ্টি এবং জ্ঞান সাধনার যে পথ, সেই পথে হেঁটে হেঁটে যদি কখনো একা হয়ে যাও মনে রেখ তোমার অর্জিত জ্ঞান তোমাকে সাহস সঞ্চয় করবে। তোমাদের প্রত্যেককে অনেক বেশি জ্ঞান চর্চা, রুচিশীল, দেশপ্রেমিক, সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ তরুণ হিসেবে আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হতে হবে। আত্মশক্তিতে ভরে উঠুক তোমার জীবন। অগ্রসরমান পথ থেকে কেউ কোনোভাবে পিছপা হবে না। নিয়মিত অধ্যয়ন, কঠোর পরিশ্রম এসবই তোমার কর্তব্য। মনে রাখতে হবে তোমাদের এ পর্যায়ে আসতে পূর্বপুরুষেরা, ৩০ লাখ মানুষ তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, শুধু আমরা ভালো থাকব বলে। দুই লাখ মা-বোন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাদের সেই নির্যাতন সয়ে যাওয়া এবং ৩০ লাখ শহীদের জন্য আমাদের রক্তঋণ আছে। সেই জীবন নিঃশেষ করা মানুষের সঙ্গে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক আছে। জীবন উচ্ছন্নে যাওয়ার নয়। আমরা আগামী দিনে বিশ্বে নেতৃত্ব দেব। এগুলো স্বপ্ন নয়, এটিই আমরা করব।’  

শিক্ষার্থীদের সততায় জীবন গড়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘তুমি জীবনে পণ করো, অন্য সবাই যদি এগিয়ে যায় তুমি কোনো দিন অসৎ হবে না, দুর্নীতিবাজ হবে না। তুমি হবে সৃজনশীল, দক্ষ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীকে বলব তুমি শুধু তোমার ভাগ্য পরিবর্তন করবে না, পুরো বাংলাদেশকে পাল্টে দিতে হবে। সে কারণেই আমরা সৃজনশীলতার পথ ধরে ক্রীড়া, সংস্কৃতি এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। তোমাদের কোনো দাবি ছিল না, কিন্তু গত বছর আমরা এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের ভারতের কলকাতায় পাঠিয়েছি। তারা ওই দেশের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পারফর্ম করেছে। এ বছর তোমরা যারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছ প্রকারান্তরে গান, কবিতা, বিতর্ক তথা সৃজনশীলতাকে মনেপ্রাণে ধারণ করো।  শুধু বই পড়ায় অভ্যস্ত হওয়া শিক্ষার্থী আমরা চাই না। আমি চাই-আমার শিক্ষার্থীরা চৌকস হবে। দেশপ্রেমিক হবে। মানুষকে ভালোবাসবে। এটিই হবে আমাদের শিক্ষার মূল লক্ষ্য।’

ঢাকা কমার্স কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি প্রফেসর ড. সফিক আহমেদ সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিইউবিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফৈয়াজ খান, সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা কমার্স কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রফেসর মো. আবু সালেহ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ।

এমএম/এমএ