স্কুলের ভর্তিতে যেসব স্কুল এখনও লটারিতে আসেনি সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল। এব্যাপারে মাউশি অধিদপ্তর ও শিক্ষাবোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

তিনি বলেন, লটারিতে যারা আসেনি তাদের আগামীতে আসতে হবে। না আসলে তাদের এমপিও স্থগিত করা যেতে পারে। আর সম্পূর্ণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি স্থগিত করা যেতে পারে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুলের ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ নির্দেশ দেন উপমন্ত্রী নওফেল।

এরপর সভাপতির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, ২০২১ সালে প্রথমবারের মতো ভর্তি লটারি শুরু হওয়ার পর ব্যাপক সাড়া মিলেছে। এরপর মাধ্যমিক স্কুলে সব শ্রেণিতে লটারির করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এখনও কিছু প্রতিষ্ঠান এ লটারির কার্যক্রমে আসেনি। এরমধ্যে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মিশনারি ও কিছু বেসরকারি স্কুল রয়েছে। আমাদের অনুরোধ থাকবে যারা এখনও লটারি কার্যক্রমের আওতায় আসেনি তারা আগামীতে আসবে। না হয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য আসনের বিপরীতে দ্বৈচয়নের ভিত্তিতে আমরা শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে ভর্তি হয়ে শিক্ষার্থীরা পাঠদান পেয়ে দক্ষতা, যোগ্যতা অর্জন করবে, জ্ঞান অর্জন করবে সেটা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। আমরা তথাকথিত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি, তারা রেডিমেড শিক্ষার্থী নেবে আর ভালো ফলাফল করবে তাহলে শিক্ষকদের কাজটা কী? তাহলে কেন তাদের আমরা অবকাঠামো দেবো? কেন এমপিও দেবো?

উপমন্ত্রী নওফেল আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা ও তাকে প্রস্তুত করা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে স্কুলের ভর্তির জন্য তাকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে এবং পরীক্ষায় পাশের জন্য কোচিং করতে হচ্ছে। তার মানে ওইসব প্রতিষ্ঠান রেডিমেইড শিক্ষার্থী চায়। রেডিমেইড শিক্ষার্থী স্কুলে ভর্তি হলে শিক্ষকদের কাজটা কী? অভিভাবকরা সামাজিক পরিচয়ের জন্য কথিত নামি-দামি স্কুলে তার সন্তানকে ভর্তি করাতে প্রতিযোগিতায় নামেন। শিক্ষায় কখনো বৈষম্য থাকতে পারে না। শিক্ষা ও স্কুলে ভর্তি সবার অধিকার। সরকার কখনো বৈষম্যকে সমর্থন করে না। অথচ দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই বৈষম্যকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে লালন করেছি। সমাজের সব শ্রেণির, সব পেশার মানুষ যাতে সব স্কুলে ভর্তি হতে পারে সে সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

একই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সুযোগে সমমতা তৈরি হয়েছে। দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যারা নামিদামি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারতো না তারা ভর্তি হতে পারছে। কাজেই একটা সুযোগের সমতা তৈরি হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রমের অধীনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-উপকরণ ব্যবহার করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দামি উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না। অভিভাবকদের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয় এমন কাজ করা যাবে না। আমরা যেটি বলেছি- ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বাসায় ব্যবহার করা জিনিসপত্র ব্যবহার করতে হবে।

এনএম/পিএইচ