ফাইল ছবি

সবকিছু ঠিক থাকার পরও ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ফল আটকে আছে। এতে অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হচ্ছে প্রায় দেড় লাখ আবেদনকারীর। দ্রুত চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা না হলে ঢাকায় বড় ধরনের কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছেন এসব নিয়োগপ্রত্যাশীরা।

জানা গেছে, সারাদেশের প্রায় ১০ হাজার নিয়োগ প্রত্যাশীর সমন্বয়ে ফল আদায়ে কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিবন্ধনধারীরা। ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থানরত নিবন্ধনধারীরা বিভিন্ন জেলার নিবন্ধনধারীদের নিয়ে ভার্চুয়াল আলোচনা করছেন এবং দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।

ভার্চুয়াল মাধ্যম ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভিন্নভাবে অনুরোধ করতে দেখা গেছে ফল প্রত্যাশীদের। তাদের দাবি, এখন কোনোরকম জটিলতা না থাকা সত্ত্বেও ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে না। এনটিআরসিএ এভাবে বিভিন্ন ঠুনকো অজুহাতে হাজার হাজার বেকার নিবন্ধনধারীদের কষ্ট দিচ্ছে, তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। যা অমানবিক ও নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছুই নয়। প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে এর সমাধান চেয়েছেন তারা। 

অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, ‘হয় ফলাফল দেওয়া হোক, না হয় তাদের মেরে ফেলা হোক’। জসিম নামে একজন আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘প্রিলি, লিখিত ও ভাইভা পাস করে মেধার মূল্যায়ন দিয়েও একটা নিয়োগের জন্য জীবন বিপন্ন হওয়ার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়’।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে চূড়ান্ত রায় আসার পর আমাদের ফল প্রকাশ করতে কোনো বাধা নেই। তবে রিটকারীরা যাতে আর কোনো আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে ফল আটকে দিতে না পারে সেজন্য আইনজীবী প্যানেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিধিনিষেধের কারণে তাদের মতামত এখনো পাইনি। পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চূড়ান্ত ফল দিয়ে দেব।’

সচিব বলেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন করতে হবে না। আমরাই এটা নিয়ে চিন্তিত। যত দ্রুত সম্ভব ফল দিয়ে দেব।’

১-১৫তম নিবন্ধনধারীদের সমন্বয়ক ও গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ফোরামের মুখপাত্র আব্দুর রহিম সুমন বলেন, এনটিআরসিএ’র সব টালবাহানার দিন শেষ। আর কোনো সুযোগ নয়। সারাদেশের নিয়োগপ্রত্যাশীরা প্রস্তুতি নিচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে। যৌক্তিক অধিকার আদায়ে কঠোর আন্দোলন অবশ্যই হবে।

গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, আমরা প্রিলি, রিটেন ও ভাইভা পাস করে হাজার হাজার টাকা খরচ করে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি। আমরা আর ধৈর্য ধরতে চাই না। এনটিআরসিএ’র সব কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ রাজু বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ফলাফল আদায়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হব। আমরা চাই এনটিআরসিএ আর তামাশা না করুক, দ্রুত রেজাল্ট দিয়ে ৫৪ হাজার বেকার ও তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাক। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র সচিব ড. এ টি এম. মাহবুব-উল করিম বলেন, তারা চায় দ্রুত ফল, আমরাও চাই দ্রুত ফল দিতে। এর জন্য আজও অফিস করছি। এখন কেউ আন্দোলন করতে চাইলে সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু আমরা তাদের বিষয়ে কোনো গাফিলতি করছি না। বরং তাদের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমরা কিন্তু এখনো রায়ের ড্রাফট কপিও হাতে পাইনি।

রায়ের ড্রাফট কপি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে- এমনটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা পাইনি। আমাদের হাতে হার্ড, সফট, ড্রাফট, সার্টিফাইড কোনোটাই আসেনি। এলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে মিটিং করে ফল দিয়ে দেব। এটা নিয়ে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এনএম/এসএসএইচ/জেএস