রাশেদা কে চৌধুরী

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধারক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, করোনায় শিক্ষা খাতে বাণিজ্য অনেক গুণ বেড়েছে। এ খাতে এমন কোনো বাণিজ্য নেই, যার কবলে আমরা পড়িনি। করোনার কারণে শিক্ষা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে প্রণোদনা প্রয়োজন। কারণ শিক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই।

শনিবার (৭ আগস্ট) শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ইরাব) একাংশের একটি অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ভার্চুয়ালি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের ইন্টারনেটের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ সম্প্রতি ইন্টারনেটে সক্ষমতা নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে সেখানে বাংলাদেশ ১৩৭ দেশের মধ্যে ১৩৫তম।

তিনি বলেন, টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষকদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ এখানে নগরায়নের শিক্ষকরা সুবিধা বেশি পাচ্ছেন। শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। আমরা অনেক ধরনের আইন দেখি। কিন্তু সেটির মনিটরিং এবং বাস্তবায়ন জরুরি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী যেসব অর্জন রয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধারে সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষায় কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। করোনা আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এরপরও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দু'একটি ছাড়া বাকিগুলো কার্যক্রম আমরা করতে পেরেছি। আমাদের মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ঘাটতি ছিল। আমরা ইতোমধ্যে সেটি পূরণের চেষ্টা করেছি। এসব স্কুলে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর বেসরকারি স্কুল-কলেজ পর্যায়ে ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে তারা নিয়োগ পাবেন।

কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, পিএসসির পক্ষ থেকে এক হাজার ২০০ শিক্ষকের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়া সাড়ে চার হাজার শিক্ষকের নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। পাঠ্যক্রম ও শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে আমাদের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি বলেন, আমরা চাই একটি সমন্বিত অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা। স্বাধীনতার এত বছর পরও বিভিন্ন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা চলমান রয়েছে। আমাদের এখনই সময় সামাজিক পরিবর্তনের, এসব কার্যক্রম হাতে নেওয়ার। করোনাকালীন সংকট নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের একটি সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ দরকার।

স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির শাজাহান সাজু বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। ঝরে পড়া রোধে সবার অংশগ্রহণ জরুরি।

শরিফুজ্জামান পিন্টু বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে শিক্ষায় যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে তাতে ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষায় বড় আকারের প্রণোদনা প্রয়োজন রয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইরাবের সভাপতি সাব্বির নেওয়াজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইরাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফুল আলম সুমন।

এনএম/ওএফ