দর্শক তার ওপর নির্ভাবনায় ভরসা রাখেন। গল্প-নির্মাণে অন্তত তিনি হতাশ করেন না। একের পর এক ব্যতিক্রম গল্প, চমকপ্রদ নির্মাণ দিয়ে নিজের এই গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে নিয়েছেন ভিকি জাহেদ। গেল রোজার ঈদেও তার নির্মিত কয়েকটি প্রজেক্ট মুক্তি পেয়েছিল। প্রশংসা পেয়েছে সবগুলোই।

গত ঈদের কাজ নিয়ে কেমন সাড়া পেয়েছেন, আগামী ঈদের ভাবনায় কী আছে, এবং পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভিকি কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের সঙ্গে।

ভিকি জাহেদের নির্মাণ

প্রসঙ্গ ঈদুল ফিতর

এই ঈদে আমার নির্মিত পাঁচটি ফিকশন প্রচার হয়েছে। এগুলো হলো ‘চম্পা হাউজ’, ‘শেষ দেখা’, ‘ঘুণ’, ‘প্রায়শ্চিত্ত’ ও ‘চোখ’। প্রত্যেকটা কাজ মানুষ ভালোবেসে গ্রহণ করেছেন। বিশেষত ‘চম্পা হাউজ’ নিয়ে যে পরিমাণ সাড়া পেয়েছি, তা অভাবনীয়। আসলে আমাদের এখানে ভৌতিক ঘরানার কাজ তো সেরকম হয় না। তাই এটা একরকম দুঃসাহস বলা যায়। এজন্য অনেকে প্রশংসাও করেছেন। আমার লক্ষ্য ছিল, দর্শক যেন ভয় পায়। সেই জায়গা থেকে সফল। আবার বাণিজ্যিক দিক বিবেচনা করলে, ভিউও হয়েছে অনেক। এবারের সবগুলো কাজই পরীক্ষামূলক, ব্যতিক্রম ধাঁচের ছিল। এরপরও দর্শক ভালোভাবে নিয়েছেন।

চম্পা হাউজ ২

গল্পটা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকে একটা সিকুয়েল আসতে পারে। ওই কৌতুহলটা রেখেই গল্প সাজিয়েছি ও নির্মাণ করেছি। আমাদের প্ল্যান ছিল, যদি ‘চম্পা হাউজ’ দর্শক পছন্দ করে, তাহলে দ্বিতীয় পর্ব আনব। যেহেতু এক্সপেরিমেন্টাল কাজ, তাই দর্শকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটা সংশয় ছিল। এখন দর্শক তো অসামান্য ভালোবাসা দিয়েছেন। তাই সিকুয়েলের ব্যাপারটা মাথায় আছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি কিছু।

নির্মাণের ফাঁকে ভিকি জাহেদ

কবে সিনেমা হবে

এ প্রসঙ্গে আসলে দুটো বিষয় বলতে হবে। প্রথমত: এখন সিনেমার টার্ম কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে। ‘রেডরাম’ কিন্তু একটা সিনেমা। পার্থক্য শুধু, এটা ওয়েব প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে। বড় পর্দায় মুক্তি পাচ্ছে না বলে এটাকে ফিল্ম বলছেন না। আসলে তো সবই ফিল্ম। দ্বিতীয়ত: বড় পর্দায় কোনো সিনেমাই প্রত্যাশা অনুযায়ী সাফল্য পাচ্ছে না। কেন জানি ভালো-খারাপ কোনো সিনেমাই দর্শক দেখছে না। এ কারণেই সিনেমা বানানোর সিদ্ধান্ত নিতে বারবার ভাবছি। এছাড়া ওটিটির জন্য তো নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। ভারতের হইচই-এর সঙ্গে কাজ হবে শিগগির, চরকি-তে নিয়মিত আমার কনটেন্ট যাচ্ছে। আমার কাছে সিনেমা সিনেমাই। সেটা ওটিটির জন্য হোক বা প্রেক্ষাগৃহের জন্য। তবুও একটা স্বপ্ন তো থাকেই বড় পর্দায় নিজের সিনেমা মুক্তি দেয়ার। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় সেদিকে সহসা যেতে চাচ্ছি না।

ভালো কাজ বনাম বেশি ভিউ বিতর্ক

প্রত্যেক নির্মাতার কাজে আলাদা ধরন আছে, সেই কাজের আলাদা দর্শক আছে। তাই কোনো কাজকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আমি বরং এটা বলতে পারি, ভালো কাজগুলোও মানুষ দেখে, ভিউ হয়। যেমন আমার ‘চম্পা হাউজ’ ইউটিউবে ট্রেন্ডিংয়ে ছিল। অন্যান্য নাটকগুলোতেও মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। সুতরাং, ব্যতিক্রমধর্মী গল্প-নির্মাণ দর্শক গ্রহণ করছে। আস্তে আস্তে ভালো কাজের চাহিদা বাড়ছে। এজন্য সমসাময়িক আরও অনেকেই ভিন্ন ধাঁচের গল্প নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।

ভিকি জাহেদ

কমন আর্টিস্ট

ঘুরেফিরে একই মুখ নিয়ে আসছি স্ক্রিনে, এটা পুরোপুরি ঠিক না। ভালোলাগা বা স্বাচ্ছন্দ্যের একটা জায়গা তো থাকেই সবার। সে হিসেবে দু’একজন আর্টিস্ট রিপিট হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম তো করছি। সম্প্রতি বিদ্যা সিনহা মিম ও জিয়াউল রোশানকে নিয়ে কাজ করলাম। গত ঈদে খায়রুল বাশারের সঙ্গে মেহজাবীনের জুটি করলাম, আফরান নিশোর সঙ্গে নিশাত প্রিয়মকে উপস্থাপন করেছি। সামনের ঈদেও ভিন্নতা থাকবে। সুতরাং, এই অপবাদটা আমার সঙ্গে যাচ্ছে না এখন।

কেআই/আরআইজে