শোবিজের জনপ্রিয় তিন তারকা তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ইভ্যালির’ কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে তারা তিনজনসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে গত ৪ ডিসেম্বর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন সাদ স্যাম রহমান নামের ইভ্যালির এক গ্রাহক।

শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, এ মামলায় যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন তাহসান-মিথিলা-ফারিয়াসহ অন্য আসামিরা। তাহসান প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ‘ফেস অব ইভ্যালি’ হিসেবে যুক্ত ছিলেন।

একটি কনসার্টে অংশ নিতে তাহসান এখন রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখান থেকেই বিষয়টি নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন।

তাহসান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি জানি মামলা তদন্ত করা হলে আমার কোনো দোষ পাওয়া যাবে না। আমি কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত না।’

এই তারকা বলেন, ‘আমরা তো ব্যবসায়ী না, শিল্পী। একটা কম্পানি কীভাবে চলছে না চলছে সেটার বিস্তারিত দূর থেকে আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব না। সারা পৃথিবীতেই তারকারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারক হিসেবে কাজ করে থাকেন। তারা কিন্তু কম্পানির মালিক না। সুতরাং এর দায়ভারও তাদের ওপর বর্তায় না। সবচেয়ে বড় কথা প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর আমি যখন আস্থা রাখতে পারছিলাম না, তখনই কিন্তু বের হয়ে চলে আসছি।’

তাহসান বলেন, ‘আমি কিন্তু চুক্তির মেয়াদও পূর্ণ করিনি। চুক্তি অনুযায়ী কাজ করিনি। তার আগেই মে মাসে চুক্তি টার্মিনেট করি। চুক্তি অনুযায়ী আমার বিজ্ঞাপন করার কথা ছিল। কিন্তু আমি বিজ্ঞাপন করিনি। দুটি লাইভের পর আর অগ্রসর হইনি। চুক্তি বাতিল করেছি।’

এই গায়ক-অভিনেতার ভাষ্য, ‘আমি জানুয়ারিতে ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হই। কিন্তু তার আগের বছর জানুয়ারি থেকে আমাকে অফার দেওয়া হয়। আমি যখন রাজি হচ্ছিলাম না আমাকে তারা বলল, আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আছি। আমরা র‍্যাবের চলচ্চিত্র অপারেশন সুন্দরবনের সঙ্গে আছি। আমরা আইসিটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আপনি কেনো না করছেন? তারপর শেষ পর্যন্ত চুক্তিটা করেছিলাম।

মানহানি মামলা করবেন জানিয়ে তাহসান বলেন, 'গত ৭ মাস ধরে মানসিকভাবে, আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। মামলাটি হয়েছে ৪ ডিসেম্বর। তাহলে বৃহস্পতিবার রাতে এই তথ্য প্রকাশ হলো কেন? এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না জানি না।'

তাহসান আরও জানান, কনসার্ট করতেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। আগামী জানুয়ারিতে তার দেশে ফেরার কথা ছিল। সে সময় একটি সিনেমার শুটিং তার। কিন্তু এই মামলার আইনি প্রয়োজন পড়লে তার আগেই তিনি দেশে ফিরে আসবেন।

উল্লেখ্য, সাদ স্যাম রহমান তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতারণামূলকভাবে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ ও সহায়তা করা হয়েছে। আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা, যা তিনি এখনো উদ্ধার করতে পারেননি। 

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রেপ্তার হওয়া ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, আকাশ, আরিফ, তাহের ও মো. আবু তাইশ কায়েস।

আরআইজে