মা হওয়ার পর ক্যারিয়ারেও দারুণ বাজিমাত করে চলছেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। ছেলে সন্তান জন্মের ১৩ দিনের মাথায় কাজ শুরু করেছেন, তারপর থেকে আর বিশ্রাম নেই! যশ দাশগুপ্ত, এনা সাহার সঙ্গে কাশ্মীরে গিয়ে শ্যুটও সেরে এসেছেন। 

বর্তমানে বেসরকারি রেডিও চ্যানেলের হোস্ট হিসেবে দেখা যাবে তাকে। ১০৪.৮ ইশক এফএমে থাকছে নুসরাতের নিজের শো। হিন্দিতে সেই শোর সঞ্চালনা করেন করিনা কাপুর খান। আর বাংলায় সঞ্চালকের দায়িত্বে নুসরাত। 

তিনি আগেই জানিয়েছিলেন তার শোর অতিথিদের জীবনের আনকাট দিক উঠে আসবে, অর্থাৎ নো-ফিল্টার। রিল থেকে রিয়েল, অকপট সত্যি থাকবে দর্শক-শ্রোতাদের জন্য। ইতোমধ্যেই ইশক উইথ নুসরাতের অন্যতম অতিথি ছিলেন বিধায়ক মদন মিত্র। ঋতাভরী চক্রবর্তীও নিজের সমস্ত গোপন কথা শেয়ার করেছিলেন নুসরাতের এই শোতে। 

তবে এবার অন্য কেউ নয়, নুসরাত নিজেই ‘অতিথির’ কাউচে বসেছেন। তাকে নিয়ে ওঠা যাবতীয় প্রশ্নের জবাব নিয়ে একেবারে ‘বোল্ড’ অবতারে ভক্তদের সামনে হাজির হয়েছেন এই অভিনেত্রী। নিজের জীবন নিয়ে খোলামেলা আড্ডা দিলেন।

শোতে নুসরাতের উদ্দেশে একজনের প্রশ্ন ছিল চলতি বছরে তার সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ কী ছিল? এক মুহূর্ত সময় না নিয়ে নুসরাত বলেন, আমি ঘণ্টায় ঘণ্টায়, মিনিটে মিনিটে বোল্ড স্টেপ নিতেই থাকি। সে সবটুকু তো আর উপুড় করে বলা যাবে না। তবে চলতি বছরে নিজের সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বলব মা হওয়ার পুরো জার্নিটা। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসম্ভব সব পরিবর্তনের শরিক হওয়া থেকে শুরু করে সেই সবকিছু মানিয়ে নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। গর্ভে সন্তান থাকাকালীন শরীরে হরমোনের তারতম্যের ফলে নিজের আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকত না আমার। বাকি পাঁচজন মায়ের মতোই। ছোট ছোট বিষয়ে কারণ-অকারণে কেঁদে ফেলতাম, বাড়ির গাছ মারা গেলেও কেঁদে ফেলতাম। আবার কারণে অকারণে খুশিও হতাম।

সামান্য থেমে মাতৃত্বকালীন অবস্থায় নিজের শারীরিক পরিবর্তনের কথাও সোজাসাপ্টাভাবে বলেছেন নুসরাত, যারা ভাবে যে আমি নাকের সার্জারি করিয়েছি তাঁদের উদ্দেশে বলি এই হরমোনের তারতম্যের জন্যই আমার নাকটা বড় হয়ে গেছিল। চামড়ার রং ‌‘টু টোনড’ হয়ে গেছিল। জেব্রার মতো লাগছিল। তবে এখন যেহেতু সন্তানের জন্ম দিয়ে ফেলেছি, তাই ধীরে ধীরে আবার আগের জায়গায় ফিরে আসছি। পাশাপাশি এটুকু বলব যে হারে ট্রোলড হয়েছিলাম সেই সময়ে, অসম্ভব মানসিক জোর না থাকলে হয়তো পারতাম না। 

বক্তব্যের শেষে জোর গলায় নুসরাত বলে ওঠেন, এটা আমার জীবন। তাই যা করেছি কোনো ভুল করেনি। আমার জীবন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। 

বরাবরই নুসরাতের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। যদিও সমাজের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে একাধিকবার সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। এবারও নিজের জীবন নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে সেকথারই আরও একবার প্রমাণ দিলেন অভিনেত্রী। হিন্দুস্তানটাইমস।

ওএফ