সৈয়দ আব্দুল হাদী নামটি উচ্চারিত হলেই সবার কানে বেজে ওঠে সুমধুর সব গান। কখনো প্রেম, কখনো বিরহ আবার কখনো দেশাত্মবোধ জাগিয়ে দিতে অসামান্য ভূমিকা রেখেছে এই কিংবদন্তির কণ্ঠ। বর্ণাঢ্য জীবনে দরাজ গলায় উপহার দিয়েছেন অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান।

নন্দিত এই শিল্পী কেবল গানেই নয়, সময় দিয়েছেন শিক্ষকতায়। কাজ করেছেন টেলিভিশন প্রযোজক হিসেবেও। ক্যারিয়ারে সাফল্যের চূড়ায় উঠেছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। তবে রঙিন জগতের স্রোতে মিশে যাননি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দারুণ পরিপাটি।

আব্দুল হাদীর বর্ণিল এই জীবনের গল্পই এবার উঠে আসছে বইয়ের পাতায়। আত্মজীবনী লিখেছেন তিনি। নাম দিয়েছেন ‘জীবনের গান’। এবারের বইমেলা উপলক্ষে প্রথমা প্রকাশন থেকে বইটি প্রকাশিত হচ্ছে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি।

এ উপলক্ষে বেঙ্গল শিল্পালয়ের দ্বিতীয় তলায় আয়োজন করা হয়েছে একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠানের। সেখানে মধ্যমণি হয়ে উপস্থিত থাকবেন আব্দুল হাদী নিজেই। এছাড়া সংগীত ও সাহিত্য জগতের অনেকেই থাকবেন কিংবদন্তির নতুন অধ্যায়ের সাক্ষী হতে।

আত্মজীবনী নিয়ে আব্দুল হাদী বলেন, ‘আমার জীবনটা বেশ ঘটনাবহুল। অনেক চড়াই-উতরাই পার করে এখানে এসেছি। আছে সুখ-দুঃখের হাজারও ঘটনা। সেগুলো আমার অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার জন্যই বইটি লেখা। ’

হাদী জানান, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে বইটি লিখেছেন। এই সময়ে অন্য কোনো কাজে সময় দেননি তিনি।

উল্লেখ্য, সৈয়দ আব্দুল হাদীর জন্ম ১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাবার শখের গ্রামোফোনে শুনে শুনেই গানের প্রতি আগ্রহ জন্মে তার। নিজে নিজে গাইতে গাইতেই গান শিখেহচেন তিনি। ১৯৬০ সালে ছাত্রাবস্থায় পেশাদার সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন হাদী। তার প্রথম গান স্থান পেয়েছিল ‘ডাকবাবু’ নামের একটি সিনেমায়। এরপর এক দীর্ঘ ইতিহাসের সৃষ্টি।

আব্দুল হাদী তার ভরাট কণ্ঠে উপহার দিয়েছেন ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার বারিস্টার’, ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’, ‘এই পৃথিবীর পান্থশালায়’, ‘চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে’, ‘এমনও তো প্রেম হয়’, ‘যেও না সাথী’, ‘আমি তোমারই প্রেমও ভিখারি’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘সূর্যদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি’, ‘চোক্ষের নজর এমনি কইরা’, ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে’, ‘আউল বাউল লালনের দেশে’সহ অসংখ্য কালজয়ী গান।

শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী হিসেবে আব্দুল হাদী পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ২০০০ সালে তিনি ভূষিত হন সম্মানজনক একুশে পদকে।

কেআই