গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়েছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২০’ বিজয়ীদের তালিকা। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তালিকাটি প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায়, শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন বেলাল খান। যিনি এর আগে ২০১৪ সালের পুরস্কারে ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ সিনেমার গানের জন্য শ্রেষ্ঠ সুরকার হয়েছিলেন।

এবারের আয়োজনে বেলাল খানকে বিজয়ী করা হয়েছে ‘হৃদয় জুড়ে’ সিনেমার ‘বিশ্বাস যদি যায় রে ভেঙে’ গানের জন্য। গানটি গেয়েছেনও তিনি। তবে পুরস্কারের বিষয়টি সামনে আসতেই সংগীত পরিচালক এম এ রহমান দাবি করছেন, তিনি এই গানের প্রকৃত সংগীত পরিচালক।

স্বপক্ষে কিছু প্রমাণ ও যুক্তিও উপস্থাপন করেছেন এম এ রহমান। তিনি বলেন, ‘বেলাল খান শুধু আমাকে গানের সুর দিয়েছেন। সংগীত পরিচালনা আমি নিজ থেকেই করেছি। বেলাল খান শুধুই সুরকার ও গায়ক। এটা মিডিয়ার সবাই জানেন। তিনি কী করে এই গানের সংগীত পরিচালক দাবি করেন? আমি পুরস্কার চাই না। যারা সংগীত পরিচালনার কিছুই জানেন না, আমাদের মতো সংগীত পরিচালককে দিয়ে গান তৈরি করে তারা নিজেরা ক্রেডিট নেন। এটা অন্যায়।’

এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন এম এ রহমান। তিনি পুরস্কারটি বাতিলের আবেদন করেছেন। অন্যথায় আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও জানান এম এ রহমান।

অন্যদিকে বেলাল খান জানালেন, তিনি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এমনকি মানহানির জন্য মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বেলাল খান বলেন, ‘সিনেমাটি তৈরির প্রথম দিকে নির্মাতা রফিক সিকদার আমাকে লিরিক পাঠান। আমি সেটা নিয়ে সংগীত পরিচালক মীর মাসুম ভাইয়ের কাছে একটি ডেমো স্ট্রাকচার তৈরি করি। তিনি লাইভে এসে এটার সত্যতা প্রমাণ করেছেন। এম এ রহমান কেবল মিউজিক অ্যারেঞ্জ করেছে। সংগীত পরিচালনার কাজটি আমিই করেছি। কোন ইনস্ট্রুমেন্ট কোথায় কীভাবে বাজবে, সব আমি বলে দিয়েছি। সুতরাং তাকে তো সেই ক্রেডিট দিয়েছি।’

আইনি নোটিশের বিষয়ে বেলাল খান বলেন, ‘এটা তো সে আমাকে পাঠায়নি। তথ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠিয়েছে কারণ দর্শানোর জন্য। এবং নোটিশে সে ভুল তথ্য দিয়েছে। বলেছে ‘বেলাল খানের গাওয়া গানটি’। কিন্তু এই গান গাওয়ার পাশাপাশি সুরও তো আমার। সেটা উল্লেখ করেনি।’

উদাহরণ টেনে বেলাল খান আরও বলেন, “আম্মাজান’ গানে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন শওকত আলী ইমন ভাই। কিন্তু তাই বলে তো তিনি তার সংগীত পরিচালক নন। সংগীত পরিচালক ছিলেন প্রয়াত স্যার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। আরেকটি কথা, ‘বিশ্বাস যদি যায় রে’ গানটি প্রকাশিত হয়েছে আড়াই বছর আগে। এত পরে কেন তিনি (এম এ রহমান) প্রতিবাদ করছেন? কারণটা কিন্তু জাতীয় পুরস্কার। হয়তো বিতর্ক সৃষ্টি করে এই পুরস্কারটা বাতিল করতে পারেন, কিন্তু আমি পিছপা হবো না।’’

দুই পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে তৈরি হয়েছে জটিল পরিস্থিতি। তাই গানটির প্রকৃত সংগীত পরিচালক কে, সেটা এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। এ অবস্থায় শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালকের পুরস্কারটি কি স্থগিত করা হবে নাকি যিনি পেয়েছেন, তার হাতেই শোভা পাবে স্বর্ণমূর্তিটি; তা সময়ই বলে দেবে।

কেআই