কয়েকদিন আগে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে ছবি দিয়েছিলেন ঊষসী চক্রবর্তী। এ ছবি নিয়ে অনেকেই তার সমালোচনা শুরু করেন। 

নিজের জন্মদিন সেলিব্রেশনে গোয়া সি বিচে হাতে সিগারেট, পাশে পানীয় এবং নিওন রঙের বিকিনিতে দেখা গিয়েছিল তাকে। সৈকতে তার একান্তে কাটানো মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেই শুরু হয় একের পর এক কমেন্ট। ঊষসীর ছোট পোশাক, সিগারেট হাতে ছবি দেখে কটাক্ষের বন্যা বয়ে যায়। 

কেউ কেউ লেখেন-  শ্যামলবাবু কি তাকে এই সব শিখিয়েছেন? কেউ লিখলেন, কিন্তু, কমরেড শ্যামল চক্রবর্তীর মেয়ের কাছে এই পোশাকে ছবি তোলা আশা করিনি। শরীরের নিম্নাংশ আরেকটু ঢেকে রাখা উচিত ছিল। 

অনেকে আবার লিখলেন,  মনে রাখবেন আপনার আলাদা একটা পরিচিতি আছে। এই পোশাক না পরেও জন্মদিন পালন করা যেত। এই ছবি দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়ার দরকার ছিল।

এসব সমালোচনার জবাব দিয়েছেন তিনি। ঊষসী বলছেন, কোনো বামপন্থী পরিবারের মেয়ে হাফপ্যান্ট পরবে না, সমুদ্র স্নানে গিয়ে সাঁতারের পোশাক পরবে না, এমন হাস্যকর কথা তিনি কস্মিনকালেও শোনেননি। 

মঙ্গলবার ছিল বাবা শ্যামল চক্রবর্তীর জন্মদিন। এদিন বাবাকে স্মরণ করে ঊষসী ফেসবুকে লেখেন, আমার বাবা কোনোদিন আমার জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেননি। আমি কী পোশাক পরব এই নিয়ে কোনো মতামত দেননি।

প্রাক্তন একজন মন্ত্রীর মেয়ে হলেও ঊষসী বেশি পরিচিত টেলিভিশন চরিত্র জুন আন্টির নামেই।  সক্রিয়ভাবে সিপিআইএমের সদস্য না হলেও ঊষসীকে প্রায়ই দেখা যায় দলীয় নানা কর্মসূচিতে। 

তবে এবার ছবি ঘিরে এই যে সমালোচনার ঝড় উঠল এসবে খুব একটা পাত্তা দিতে নারাজ ঊষসী। আবার বাবা শ্যামল চক্রবর্তীকে জড়িয়ে তাকে যেসব কটাক্ষ করা হয়েছে মূলত তার জবাব দিতেই তিনি বেছে নেন বাবার জন্মদিনটাকে। 

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, অনেক দিন ধরে কয়েকটা কথা বলব ভাবছিলাম। আজ বাবার জন্মদিন উপলক্ষে বলেই দিই। বামপন্থী পরিবারে বড় হওয়ার সুবাদে এবং প্রায় সাত বছর বামপন্থী রাজনীতি ও লিঙ্গরাজনীতি নিয়ে গবেষণা করার সুবাদে আমি এটাই বুঝেছি ও শিখেছি, মেয়েদের পোশাক নিয়ে অযথা খাপ পঞ্চায়েত খোলা আর যাই হোক বাম রাজনৈতিক ঘরানার সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না। 

ঊষসী আরও লেখেন, বামপন্থা লিঙ্গ সাম্যের কথা বলে এবং সমাজের রক্তচক্ষু বা অঙ্গুলি হেলনকে তোয়াক্কা না করে মেয়েদের নিজের শর্তে বেঁচে থাকার কথা বলে। আমিও আমার বাবার কাছে তাইই শিখেছি। শিখেছি স্বাধীনভাবে পোশাক নির্বাচন করতে এবং রবীন্দ্রজয়ন্তীতে, শিক্ষাঙ্গনে, আইন সভায় বা সমুদ্র তটে পরিবশের সঙ্গে মানানসইভাবে সাজতে। আর হ্যাঁ, সেই সঙ্গে ঘৃণা করতে শিখেছি সেই সব সিউডো বামপন্থার ধ্বজাধারীদের যারা নিজেদের ভেতরে পিতৃতন্ত্রের বীজ বহন করে মেয়েদের চালচলন, পোশাক নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করে যেখানে সেখানে খাপ পঞ্চায়েত খোলেন। এই জাতীয় চিন্তাভাবনা দক্ষিণপন্থীদের শোভা পায়, বামপন্থীদের নয়।

এনএফ