সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের (বারডেম) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন সংগীতশিল্পী আকবর। দীর্ঘদিন ধরে নানান রোগের সঙ্গে লড়তে থাকা এই গায়কের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা পোস্টের কাছে আকবরের চিকিৎসার সবশেষ অবস্থা জানিয়েছেন তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা।

তিনি বলেন, ‘আকবরের চিকিৎসার কোনো উন্নতি হয়নি। প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। ডাক্তার জানিয়েছেন রক্ত যাওয়া বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ডাক্তার আরও জানিয়েছেন এ অবস্থা থেকে ফেরার চান্স খুব কমই থাকে। তারপরও প্রস্রাব আর পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া বন্ধ হলে তারা হয়তো আমাদের কিছুটা আশা দিতে পারতেন।’

এদিকে আকবরের শারীরিক অবস্থারর আপডেট জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তার মেয়ে অথৈ। সেখানে বাবার জন্য তার কণ্ঠে ঝরেছে আহাজারি।

‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে আবিষ্কারক হানিফ সংকেতের সঙ্গে আকবর

আকবরকন্যা লিখেছেন, ‘আব্বুর শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ। দুইটা কিডনিই ড‍্যামেজ, লিভারের অবস্থা খুবই খারাপ। হিমোগ্লোবিন ৫.৯।পায়খানা এবং প্রস্রাব দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে। আব্বু এখনও আইসিইউতে আছে। ডাক্তার বলছে এই অবস্থা থেকে আব্বুর ফেরার চান্স খুবই কম।’

বাবার জন্য আহাজারিও ঝরে অথৈর কণ্ঠে। তার কথায়, ‘আল্লাহ তুমি আমার আব্বুকে ভালো করে দাও। আল্লাহ তুমি আমার আব্বুকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিও না। আব্বু ছাড়া আমার পুরো দুনিয়ায় অন্ধকার। আব্বুকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। আব্বুকে আমি খুব ভালোবাসি। সবাই আমার আব্বুর জন্য দোয়া করবেন। আব্বু যেন ভালো হয়ে যায়। আমিন।’

দুই বছর ধরে ডায়াবেটিস, জন্ডিস, কিডনি, রক্তের প্রদাহসহ আরও নানা শারীরিক জটিলতায় ভূগছেন আকবর। এসবের চিকিৎকসা করেও সেরে উঠতে পারছিলেন না তিনি। দুটি কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় তার শরীরে পানি জমে ডান পা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সপ্তাহ দুই আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই পা কেটে ফেলা হয়। পা কাটার পর তার কিডনি ও লিভারের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এ জন্যই তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি।

উল্লেখ্য, দেড় যুগ আগে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে’ গানটি গেয়ে তুমুল হইচই ফেলে দেন তখনকার পেশায় রিকশাচালক আকবর। তবে সেই গান বদলে দেয় তার জীবন। রাস্তায় রিকশায় প্যাডেল মারা ছেড়ে গানে মনোনিবেশ করেন তিনি।

আরআইজে