বলিউড তারকা টাবু তার সঙ্গে প্রযোজক ও পরিচালক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সম্পর্কের কথা কাউকে জানাননি। কিন্তু এক রেডিও শোয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ভুলবশত সাজিদের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা বলে ফেলেন অভিনেত্রী।

১৯৯২ সালের ১০ মে। দুই বলি তারকার বিয়ে উপলক্ষে বলিপাড়ায় সানাই বেজে উঠেছিল। সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন বলিউডের অভিনেত্রী দিব্যা ভারতী।

কিন্তু সাজিদ ও দিব্যার সুখের সংসার এক বছরও টেকেনি। বিয়ের ১০ মাস পরেই তাদের বাড়ির পাঁচতলা থেকে পড়ে মারা যান দিব্যা। এই ঘটনায় সাজিদ ভীষণ ভেঙে পড়েন। নিজেকে আরও কাজে ব্যস্ত করে তুলেছিলেন তিনি।

দিব্যার কাছের বান্ধবী হওয়ায় সাজিদকে আগে থেকেই চিনতেন বলি অভিনেত্রী টাবু। দিব্যা মারা যাওয়ার পর সাজিদের সঙ্গে তিনি একটি ছবির কাজ শুরু করেন। ‘জিৎ’ ছবির জন্য একসঙ্গে কাজ করছিলেন তারা।

শুটিংয়ের ফাঁকে নিজের সুখ-দুঃখের কথা টাবুর সঙ্গে ভাগ করতেন সাজিদ। দু’জনের বন্ধুত্ব ক্রমশ গভীর হতে থাকে। টাবুকে নিজের অজান্তেই ভালবেসে ফেলেন সাজিদ।

নিজের অনুভূতির কথা টাবুকে জানানোর পর সাজিদ বলেছিলেন, তুমি আমার সঙ্গে থাকতে চাইলে আমার জীবনের দ্বিতীয় নারী, দ্বিতীয় প্রেম হয়েই থাকতে হবে। দিব্যাকে আমি ভুলতে পারব না। ও-ই আমার জীবনের প্রথম নারীর আসনে থাকবে। 

সাজিদের কথায় কোনো রকম আপত্তি জানাননি টাবু। তার সঙ্গে সাজিদের মেলামেশা আরও বাড়তে থাকে। শোনা যায়, গোপনে নাকি আংটিবদলও সেরে ফেলেছিলেন তারা।

টাবু ও সাজিদ দু’জনেই তাদের সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। স্ত্রী মারা যাওয়ার পরেই বলিপাড়ার অন্য এক অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার খবর পেলে সাজিদ কটাক্ষের শিকার হবেন বলে মনে করেছিলেন তারা। টাবুও তার সঙ্গে সাজিদের সম্পর্ক নিয়ে কাউকে জানাননি। কিন্তু এক রেডিও শোয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় ভুলবশত সাজিদের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা বলে ফেলেন অভিনেত্রী। এই ঘটনার পর সাজিদ সিদ্ধান্ত নেন যে, টাবুকে বিয়ে করবেন তিনি।

কিন্তু সাজিদের বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেন টাবু। এমনকি, মুম্বাই ছেড়ে হায়দরাবাদে চলে যান অভিনেত্রী। পরে সাজিদ জানতে পারেন যে, তাদের সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি এসে পড়ায় টাবু তার কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন। এই তৃতীয় ব্যক্তি আর কেউ নন, দক্ষিণী ফিল্ম জগতের অভিনেতা নাগার্জুন।

১৯৯৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় রোম্যান্টিক কমেডি ঘরানার তেলুগু ছবি ‘আভিড়া মা আভিড়ে’। এই ছবির শুটিং করতে গিয়েই টাবুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন নাগার্জুন।

সাজিদের ওপর থেকে টাবুর মন সরে যায়। নাগার্জুনের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোর জন্য মুম্বাই ছেড়ে হায়দরাবাদে চলে যান টাবু। শোনা যায় যে, হায়দরাবাদে নিজের বাড়ির কাছে টাবুর জন্য একটি বাড়ি কিনেছিলেন নাগার্জুন।

২০০০ সালে টাবু ও নাগার্জুনকে একসঙ্গে দেখা যায়। সিনেমা জগতের একাংশ মনে করেছিলেন যে, স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর টাবুকে বিয়ে করবেন নাগার্জুন। টাবুও তাই ভেবেছিলেন। কিন্তু নাগার্জুনের সঙ্গে সংসার করার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় অভিনেত্রীর।

১০ বছরের বেশি সময় নাগার্জুনের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার পর টাবু বুঝতে পারেন যে, নাগার্জুনের পক্ষে বিবাহবিচ্ছেদ করা অসম্ভব। ২০১২ সালে অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টেনে মুম্বাই ফিরে আসেন টাবু।

মুম্বাই ফিরে আসার পর আবারও নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন টাবু। অন্য দিকে সাজিদও এক সাংবাদিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ফেলেন। টাবুর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ওয়ার্দা খান নামে এক সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচয় হয় সাজিদের। সাজিদকে প্রেম নিবেদন করেন ওয়ার্দা। ২০০০ সালে তারা বিয়ে করেন।

ওএফ