ঢাকাই সিনেমার স্বর্ণালী যুগের নায়িকা নূতন। বহু সফল সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। দেশজুড়ে পেয়েছেন পরিচিতি। জ্যেষ্ঠ চরিত্রে এসেও নিয়মিত কাজ করেছেন। গ্ল্যামারাস নায়িকা থেকে নিজেকে অভিনেত্রীতে পরিণত করেছেন তিনি।

এই সময়ের যেসব তরুণী নায়িকা হতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলেছেন নূতন। তার মতে, শুধুমাত্র নিজের ইচ্ছায় নায়িকা হওয়া উচিৎ নয়। অবশ্যই পরিবারের সমর্থন থাকা প্রয়োজন।

নূতন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘অনেক মেয়ে ছবি দিয়ে, ভয়েস দিয়ে বলে, আপু নায়িকা হতে চাই। কোনো পথ নেই, বাবা-মা রাজি না। স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই, হেল্প করেন। তাদের জন্য বলি, বাবা-মা না চাইলে এই পথ তোমাদের জন্য না। দু-তিন দিন নাম কামিয়ে লাভ নেই, স্রোতে হারিয়ে যাবে। তখন আরও সমস্যা। সবাই জানবে নায়িকা, আসলে তুমি কিছুই না। এখনকার ৮০ শতাংশ নায়িকা এই সমস্যায় আছেন।’

নিজের উদাহরণ দিয়ে নূতন লেখেন, ‘আমার মা চাইতেন, আমি নায়িকা হই। তাই আমি নায়িকা হয়েছি, হারিয়ে যাইনি। মা-বাবা যা চায়, তাই করো। তাদের দোয়া ছাড়া সামনে যাওয়া যাবে না। শুধু পরিশ্রম দিয়ে জীবনে কিছু হয় না। যদি বাবা-মায়ের সাপোর্ট থাকে, অভিনয়-নাচ শিখে থাকো, তাহলে বলব আগে মিনিমাম পড়াশোনা শেষ করে আসো। কারণ শিক্ষা অনেক জরুরি। শিক্ষা মানে তোমার ব্যাকআপ। এখানে কিছু নাহলে নায়িকা নাম দিয়ে আর শিক্ষা কাজে লাগিয়ে টিকে থাকতে পারবা। শিক্ষা থাকলে কেউ তোমাকে ভুলভাবে পরিচালিত করতে পারবে না।’

নূতনের স্ট্যাটাস

সিনেমার স্বর্ণালী সময় এখন নেই জানিয়ে নূতন লিখেছেন, ‘আগের দিন নেই যে, এক ছবি করে সাইনিং মানি দিয়ে গাড়ি কিনে ফেলেছি। দেশের মানুষ চিনেছে, ম্যাম বলে ডাকা, রাস্তায় জ্যাম লাগা, তারা হওয়া—তা এখন নেই। সুতরাং ভেবেচিন্তে এসো। নায়িকা হব, মানুষ চিনবে, ফেসবুক লাইক—এসব আসলে পেটে ভাত দেবে না। বরং অসম্মানিত হবে, সবাই বলবে ইনি নামে নায়িকা কাজে অন্যটা। দুই নম্বর নায়িকা, রাতের নায়িকা, লাইনের নায়িকা, চলে না—এসব বলবে। এই মুহূর্তে কেউ ফিল্মের নায়িকা হবে, সেটা ভাবতেই আমার ভয় লাগে। এখন ফিল্মে সম্মানও নেই। মানুষের মুখে অসম্মানিত হওয়ার জন্য তোমার জন্ম হয়নি।’

এই সময়ের অনেক নায়িকাই নির্মম জীবনযাপন করছে বলে জানিয়েছেন নূতন। সুতরাং তাদের ঝলমলে জীবনের ছবি দেখে নায়িকা হওয়ার প্রতি উৎসাহিত হওয়া যাবে না। নায়িকা হতে ইচ্ছুক তরুণীদের সতর্ক করে নূতন লিখেছেন, ‘চলচ্চিত্র জীবনের একটা অংশ, তবে জীবন নয়। চলচ্চিত্রের নেশায় ডুবে নিজের নিশ্চিত ভবিষ্যত অন্ধকারে ফেলো না। যে কাজ যতটা সহজ সে কাজের পরিণতি ততই ভয়াবহ। কারও কাছে গিয়ে প্রতারিত হয়ো না। কেউ কাউকে শিল্পী বানাতে পারে না। যারা শখের বসে নায়িকা হতে চাও তারা আসতে পারো। ফেসবুকে নায়িকা হতে ফিল্ম করা লাগে না। দু-তিন লাখ টাকা খরচ করে দুইটা সিনেমার মহরত করলেই হবে। ভালো থেকো।’

কেআই