গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার ছায়া অবলম্বনে ‘শনিবার বিকেল’ বানিয়েছেন দেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বছর চারেক আগেই সিনেমাটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়। মুক্তির জন্য সেন্সর বোর্ডে জমাও দিয়েছিলেন নির্মাতা। কিন্তু মুক্তির অনুমতি মেলেনি। বরং সেন্সর বোর্ড সিনেমাটিকে আটকে দেয়।

পরে অবশ্য আপিল করেছিলেন ফারুকী। সেই আপিলের বয়স পেরিয়েছে সাড়ে তিন বছর। কিন্তু কোনো উত্তর পাননি। তাই মাঝেমধ্যেই নিজের সিনেমাটি নিয়ে মন খারাপ হয় তার। কেননা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি প্রদর্শিত হয়েছে এবং ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে। অথচ নিজ দেশেই মুক্তি দিতে পারছেন না।

একই ঘটনা নিয়ে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি বলিউডে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘ফারাজ’। অথচ যে দেশের ঘটনা নিয়ে সিনেমাটি সেই বাংলাদেশের সিনেমাটিই এখনও মুক্তি পায়নি। বিষয়টি উল্লেখ করে এবার ফারুকী বললেন, “আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ‘শনিবার বিকেল’কে বাংলাদেশের মানুষের সামনে হাজির করতে দিতে হবে।”

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ফারুকী লেখেন, “ফেব্রুয়ারির ২ তারিখের মধ্যে ‘শনিবার বিকেল’ বাংলাদেশের মানুষের সামনে হাজির করতে দিতে হবে। কথা আমাদের একটাই।”

এই নির্মাতার কথায়, “এর আগে আমাদেরকে আড়েঠাড়ে বলা হয়েছে, উনারা চান না বহির্বিশ্বের মানুষের কাছে ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটা যাওয়ার মাধ্যমে ঐ দুঃসহ স্মৃতি আবার ফিরে আসুক। আই মিন সিরিয়াসলি?”

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ইউটিউবে এই বিষয়ে হাজার হাজার ভিডিও আছে, আর উনারা ভাবছেন একটা সিনেমা আটকাইয়া এই ঘটনা ধামাচাপা দিবেন। আর শনিবার বিকেল তো বিদেশে দেখানোই হচ্ছে! কোথাও ভাবমূর্তি খসে পড়ার ঘটনাতো শুনি নাই। হলিউড রিপোর্টারতো তাদের রিভিউতে আপনাদের নিয়া হাসাহাসি করছে। তারা বলছে, এই ছবি দেইখা তারা বুঝে নাই ভাবমূর্তি কেমনে খসবে! তাদের মনে হইছে ভাবমূর্তির যদি কিছু হয় এই ছবির ফলে সেটা হইতে পারে ভাবমূর্তি বৃদ্ধি!’

সবশেষ এ বিষয়ে দুটি প্রশ্নও রাখেন ফারুকী। তার কথায়, ‘এখন আমার প্রশ্ন, জনাবঃ ১. ফেব্রুয়ারি ৩ তারিখ যে ফারাজ মুক্তি পাবে! এখন আপনি কীভাবে ঐটা ধামাচাপা দিবেন?

২. শনিবার বিকেলের প্রথম সেন্সর প্রদর্শনীর পর সেন্সর বোর্ড ছবির প্রশংসা করে বলেছেন দ্রুত সার্টিফিকেট দিবেন। কার ইশারায় এটার দ্বিতীয় প্রদর্শনী হলো, সেটার তদন্ত কি কোনোদিন হবে না?’

উল্লেখ্য, ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমায় বিভিন্ন দেশের শিল্পী অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে আছেন বাংলাদেশের জাহিদ হাসান, নুসরাত ইমরোজ তিশা, মামুনুর রশীদ, ইরেশ যাকের, ইন্তেখাব দিনার, গাউসুল আলম শাওন, নাদের চৌধুরী, ভারতের পরমব্রত চ্যাটার্জি, ফিলিস্তিনের ইয়াদ হুরানিসহ আরও অনেকে।