ঢাকা কলেজের ২৩তম ব্যাচের মেধাবী শিক্ষার্থী সাকিবুল ইসলাম। অন্য দশজনের মতো সুস্থ স্বাভাবিক নন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী যখন তার গলায় জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের গাওয়া ‘সবুজের বুকে লাল’ গানটি তোলেন মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় নেটমাধ্যমে। নজরে আসে খোদ আসিফেরও। গত ৫ ফেব্রুয়ারি সামাজিকমাধ্যমে ভিডিওটি শেয়ার করে সাকিবের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন গায়ক।

এবার সরাসরি ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করে নিজের মুগ্ধতার কথা জানালেন আসিফ। ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা কলেজের দৃষ্টিহীন ছাত্র সাকিবুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। আল্লাহ তাকে দৃষ্টি শক্তি দেননি ঠিকই। তার বদলে দিয়েছেন প্রখর ব্যক্তিত্ব আর বুদ্ধিমত্তা। বিশ তারিখ সাকিবের বিশ বছর পূর্ন হবে। পাঁচ বছর আগে মাকে হারিয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত প্রতিকূলতা শান্তভাবে মোকাবেলা করার অদ্ভূত শক্তি তার রয়েছে। আমার প্রতিটি কৌতূহলী প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে ভাবলেশহীন চিত্তে। স্মার্টনেস তার জন্মগত প্রাপ্তি। কখনও কখনও মনে হয়েছে সব কিছু তার মাথায় প্রোগ্রামিং করা। চৌকস সাকিব অনেক বড় স্বপ্ন শুধু দেখে না, ওই অধিকারটুকু সে রাখে।’

বারবার ফেসবুক ছেড়ে যেতে চাইলেও যাওয়া হয়নি। নেপথ্য কারণ জানিয়ে শিল্পীর বর্ণনা, ‘চারপাশে হরহামেশা বেহুদা চাণক্য দেখেই যাচ্ছি। সাকিবের সাথে সাক্ষাৎ শেষে মনে হয়েছে অনেকদিন পর একজন স্ট্রং পার্সোনালিটির সঙ্গে মিট করেছি, যার সঙ্গে চলতে পারলে নিজেকেও যথেষ্ট আপগ্রেড করা যাবে। ফেসবুক ব্যবহারের স্বার্থকতা খুঁজে পেয়েছি কিছু হারানো বন্ধু ফিরে পাওয়ার মাধ্যমে, ফ্যানদের সঙ্গে নিজেকে শেয়ার করার মাধ্যমে, সর্বশেষ সাকিবের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে আরও একবার উপকৃত হলাম। শতবার ভেবেছি সময় নষ্ট না করে ফেসবুকের বাইরে চলে যাব, এ সমস্ত মায়ায় থেকে গেছি।’

সাকিবের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন আসিফ। তার কথায়, ‘অদম্য সাকিবের আছে শক্তিশালী কণ্ঠ আর যেকোনো নতুনকে দ্রুত আত্মস্থ করার বিরল ক্ষমতা। সাকিব গান গাইবে, আমার সমস্ত শক্তি আর সমর্থন তার সঙ্গে থাকবে। পড়াশোনায় মেধাবী সাকিব একদিন এই দেশের মানুষের চোখের মণি হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ্।’

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লাল সবুজ’ সিনেমার গান ‘সবুজের বুকে লাল’। মিল্টন খন্দকারের কথা ও সুরে এবং আজমীর বাবুর সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দেন আসিফ আকবর। ছবিতে এই গানে ঠোঁট মেলান অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ।