বরেণ্য চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়ছেন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চলছে তার চিকিৎসা। রক্তে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং কিডনি ও মস্তিষ্ক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। গত চার মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এ নন্দিত নায়ক।

আজ ১৮ আগস্ট ফারুকের জন্মদিন। জীবনের বিশেষ এই দিনটিতেও তিনি রয়েছেন আইসিইউতে। নিস্তেজ দেহে লড়ছেন বেঁচে থাকার জন্য।

অবশ্য ফারুক সুস্থ থাকলেও জন্মদিন উদযাপন করতেন না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকেই তিনি নিজের জন্মদিন পালনে উৎসাহী নন। কারণ তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, আগস্ট হলো শোকের মাস। এ মাসে জন্মদিন উদযাপন করা সাজে না। অন্তত তার মতো বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজনের পক্ষে তো না-ই!

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। তবে তার বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। স্কুল জীবনেই তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। এরপর ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সে জন্য তার নামে ৩৭টি মামলা দায়ের হয়েছিল। কিন্তু দমে যাননি ফারুক। পরবর্তীতে ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ফারুকের সিনে ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৭১ সালে মুক্তি পাওয়া এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ সিনেমার মাধ্যমে। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’, ‘আলোর মিছিল’, ‘সুজন সখী’, ‘লাঠিয়াল’, ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘মাটির মায়া’, ‘নয়নমনি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘নাগরদোলা’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘কথা দিলাম’, ‘মাটির পুতুল’, ‘সাহেব’, ‘ছোট মা’, ‘এতিম’, ‘ঘরজামাই’, ‘মিয়া ভাই’র মতো অসংখ্য সিনেমায়।

ফারুক তার অভিনয়ের জন্য ১৯ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনীত হয়েছিলেন। কিন্তু তার হাতে পুরস্কার উঠেছিল কেবল একবার। অবশ্য ২০১৬ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। অভিনয়ের বাইরে তিনি ঢাকা ১৭ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

কেআই