কোথাও বিদ্রোহী কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বীর অভাব, অস্বস্তিতে আ. লীগ
স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কোথাও বিদ্রোহী আবার কোথাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। নেতারা বলছেন, দলের বিদ্রোহীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিও দলে অস্বস্তি তৈরি করছে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। শতাধিক ইউনিয়নে নৌকার বিরুদ্ধে লড়াই করেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এ ধাপের ভোটে দলীয় অনেক নেতা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতও হন।
বিজ্ঞাপন
এর আগের ধাপে ২০৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ছিল প্রায় একই চিত্র। তখন ৪৪টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা।
দুই ধাপের নির্বাচন নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন তো এখন নেই। এখন নির্বাচন নির্বাচন খেলা হচ্ছে। মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। কমিশন তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। তাদের ধারণা, ভোট দিতে যাওয়া না যাওয়ায় কিছুই যায় আসে না। ক্ষমতাসীনদের মনোনীতরা নির্বাচিত হবেনই। নির্বাচন এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।’
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিদ্রোহী দমনে আমাদের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আবার বিদ্রোহ দমনে সফল হতে পারছি না, সেটাও ঠিক। তবে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, ধীরে ধীরে সুফল আসবে। সিস্টেম দাঁড় করাতে সব রাজনৈতিক দলকে কমিটমেন্টে আসতে হবে।
‘দলে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকুক, এটা যেমন আওয়ামী লীগ চায় না তেমনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোক, তাও চায় না। দল চায় একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হোক।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে দলের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান জানান দেওয়া হয়েছে। তবুও দেখা যাচ্ছে এমন প্রার্থী থেকেই যাচ্ছে। তবে দল অনড় অবস্থানে থাকবে। ধীরে ধীরে সুফলও আসবে। আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন চায়। অন্য রাজনৈতিক দলের অসহযোগিতার কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকছে না।’
তিনি আরও বলেন, প্রার্থী না থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। এটা কীভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা চলছে। বিদ্রোহী প্রার্থী দমনের চেয়ে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করা নিয়েই আমরা বেশি ভাবছি। কোন কৌশলে তা বাস্তবায়ন করা যায় তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিদ্রোহী দমনে নতুন কৌশল আসতে পারে। আমাদের কঠোর অবস্থানের কোনো নড়চড় হবে না। তবে এ বিষয়ে প্রত্যন্ত পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মানানো খুবই কষ্টের।’
এইউএ/আরএইচ/এমএআর/