বাংলাদেশে তামাকজনিত রোগে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ জন মানুষের মৃত্যু হয়। বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু রোধে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। 

‘জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ত্বরান্বিতকরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন। সোমবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর হোটেল লা ভিঞ্চিতে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ কর্মশালাটি আয়োজন করে।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। তিনি বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষ ব্যাধি এবং অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। যতো দ্রুত আইনটি সংশোধন করা হবে ততো বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। 

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দ্রুত সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি।

অনুষ্ঠানে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করায় গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী। এসময় তিনি জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনকে ত্বরান্বিত করতে গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান।

সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, যদিও তামাকজাত দ্রব্য থেকে সরকারি কোষাগারে বড় একটা অংকের টাকা প্রতিবছর জমা হয়, কিন্তু এই টাকা কিন্তু তামাক থেকে ইনকাম হয়ে আসে না। আসলেও সেটা খুবই কম। তাহলে সরকারকে দেওয়া এই টাকাটা কোথায় থেকে আসছে? প্রকৃত অর্থে সেটা কিন্তু পাবলিকের পকেট থেকেই যাচ্ছে।

‘জনগণ তার পকেটের অর্থ দিয়ে তামাক কিনছে, আবার যখন এই তামাকের কারণে সে নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, তখন আবার সেই তাদের পকেট থেকেই বড় আকারের খরচ হচ্ছে। এই যে তামাকের কারণে মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, সেটা তো সরকারকে ভাবতে হবে‘, যোগ করেন এই গবেষক।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সেক্রেটারি মাইনুল হাসান সোহেল, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর আতাউর রহমান মাসুদ, সিটিএসকের ব্র্যান্ড ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া প্রমুখ।

টিআই/এসকেডি