দেশে প্রতিদিন তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪৫০ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি ও অন্যান্য অসংখ্য প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো তামাক। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন তারা।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড গবেষণা ইনস্টিটিউটের হল রুমে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় এ দাবি জানান পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।

আরও পড়ুন>>তামাকজনিত মৃত্যু রোধে আইন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার (ক্লিনিকাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে পৌনে চার কোটির বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন তিন কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি ও অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিচার্স ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড রিসার্চের বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, বিশ্বে তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এর কারণ হচ্ছে, তামাকের সহজলভ্যতা। তাই তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিকল্প নেই। দ্রুত যাতে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ পাশ হয়, সেজন্য পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

আরও পড়ুন>>তামাকজনিত রোগে ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকা

পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক শাহ মনির হোসাইন বলেন, তামাক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরকার যে রেভিনিউ পায়, স্বাস্থ্যখাতে তার থেকে বেশি ব্যয় করে। তাই দেশ থেকে তামাক নির্মূল করতে তামাক কোম্পানিগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। তা না হলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূল করা সম্ভব হবে না। এজন্য এখনই তামাক নির্মূলের জন্য আইন করার জোর দাবি জানাতে হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট (ইলেক্ট) আবু জামিল ফয়সাল, সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ডা. এসএম শহিদুল্লাহ, ডা. মোশতাক হোসাইন, ডা. মিথিলা ফারুক, ডা. শাইখুল ইসলাম ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ আরও অনেকে।

টিআই/কেএ