দেশের হাজারো কিডনি রোগীর ভরসাস্থল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, যেখানে সর্বসাধারণের জন্য সবসময় সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। সেই গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিডনি জটিলতায় ভুগে। যদিও উন্নত চিকিৎসা ও কিডনি প্রতিস্থাপনে বিনা খরচে বিদেশে চিকিৎসার প্রস্তাব করা হয়েছিল তাকে, সেই প্রস্তাবে সরাসরি ‘না’ বলেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার আগে সোমবার (১০ এপ্রিল) তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে অবস্থার উন্নতি না হলেও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চাননি।

তিনি বলেন, ডা. জাফরুল্লাহর শেষ ইচ্ছা ছিল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালেই তিনি চিকিৎসা নিয়ে মরতে চান। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও তিনি রাজি হননি।

এর আগে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেই সময়ে বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় তার অবস্থা ছিল বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তখন তাকে কিডনি অকেজো হয়ে যাওয়ায় কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হলে তিনি এক বাক্যে নাকচ করে দেন। 

কেন সেই পরামর্শে রাজি হননি জানতে চাইলে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছিলেন, ‘বাইরে করাব না। বিদেশে যাব না। আমরা একটি কিডনি প্রতিস্থাপন কেন্দ্র করতে যাচ্ছি। করোনা না হলে এত দিনে কাজ শুরু হয়ে যেত।'

এর আগে ২০১৪ সালের দিকে তার কিডনিতে প্রথম সমস্যা শুরু হলে বিদেশি বন্ধুরাও তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেটি স্মরণ করিয়ে দিলে একটি গণমাধ্যমকে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘হ্যাঁ। আমাকে হার্ভার্ড বলেছিল, বিনা পয়সায় কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবে। আমি বলেছি, তুমি বাকিদের করবা? খালি আমারই তো করবা। আমি বলেছি, আমি আমার দেশে চিকিৎসা করাতে চাই, চিকিৎসা উন্নত করতে চাই। সবাই যেন সুযোগটা পায়।’

টিআই/ওএফ