বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অনন্য মডেল বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি। যে কারণে আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকের কনসেপ্ট দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার একটি অনন্য মডেল।

শনিবার (২৭ মে) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ প্রকাশিত ‘ফিফটি ইয়ারস অব বাংলাদেশ : অ্যাডভান্সেস ইন হেলথ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সারাদেশে ১৩ হাজারের মতো কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে এবং এগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে। এসব ক্লিনিকে মানুষ চিকিৎসা পরামর্শ ছাড়াও বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে।

ড. মোমেন বলেন, কোভিড ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে রোল মডেল। বাংলাদেশ তার ৫০ মিলিয়ন মানুষকে একদিনে কোভিড-১৯ টিকা নিশ্চিত করা সম্ভব করেছে। এই উদাহরণ আর কোথাও নেই।

ওষুধশিল্পের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওষুধে এখন বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও বাংলাদেশ এখন ১১৭টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে।

প্রকাশিত বই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এই বইটি পড়লে যে কেউ দেশের স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে আরও জানতে পারবে। বইটি যেকারও জন্য একটি মূল্যবান দলিল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে, এশিয়া ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ। মূল বক্তব্য দেন জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র সহযোগী ড. হেনরি পেরি।

ড. পেরি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেক অর্জন করেছে। তিনি বক্তব্যে আয়ুষ্কালের উন্নতির কথা তুলে ধরেন; শিশু মৃত্যুহার হ্রাস; উর্বরতা হার হ্রাস; টিকাদানের কভারেজ সম্প্রসারণ; একটি শক্তিশালী সম্প্রদায়-ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার বিকাশের কথা তুলে ধরেন।

আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে বলেন, সুইডেন এবং বাংলাদেশ শুরু থেকেই খুব ভালো বন্ধু এবং স্বাস্থ্য খাতে উভয় দেশই যৌথভাবে মাইলফলক অর্জন করছে।

কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের অসাধারণ সাফল্য সুশীল সমাজের সংগঠনসহ সব স্টেকহোল্ডারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রতিশ্রুতির ফলস্বরূপ।

প্রসঙ্গত, বইটিতে ১৯৭১ সাল থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী স্বাস্থ্যখাতে যে অগ্রগতি হয়েছে তা নথিভুক্ত করা হয়েছে। দেশি ও প্রবাসী ১০১ জন জনস্বাস্থ্যবিদ, গবেষক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শিক্ষক এবং সাংবাদিক এই গ্রন্থে স্বাস্থ্যখাতের সাফল্য ফুটিয়ে তুলেছেন প্রাসঙ্গিকভাবে তেমনি বিশ্লেষণের মাধ্যমে চিত্রিত করেছেন এই খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো। এই গ্রন্থের বিশটি অধ্যায়জুড়ে রয়েছে স্বাস্থ্য এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে বাংলাদেশের উন্নতির বর্ণনা।

টিআই/জেডএস