দেশে নারীদের মৃত্যুর প্রধানতম দুটি কারণ হলো জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার। এরমধ্যে স্তন ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশে উভয় ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থানীয়। আর জরায়ুমুখ ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে নারীদের ক্যান্সারের মধ্যে চতুর্থতম এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর চতুর্থতম শীর্ষ কারণ।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গবেষণা কক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুনভাবে ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়, তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মারা যায়। একইভাবে প্রতিবছর নতুনভাবে ১৩ হাজার ২৮ জন নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৭৮৩ জন মারা যায়। জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকা অনেকাংশে নির্ভর করে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও কার্যকরী চিকিৎসা দেওয়ার ওপর। তবে দেরিতে রোগ শনাক্তকরণ হলে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দেখা কঠিন বিষয়। এতে মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

বক্তারা জানান, বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এসব রোগের চিকিৎসা সুবিধা সীমিত ও ব্যয়বহুল। প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করা গেলে মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।

তারা জানান, জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচির আওতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সিংগাইর, মানিকগঞ্জ, রায়পুরা, নরসিংদী এ এইচপিভি পাইলট প্রোগ্রামসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে ৩০-৬০ বছর বয়সী মহিলাদের এইচপিভি নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ সব নমুনা নিয়ে গবেষণা করা হবে। যার ফলে বাংলাদেশের মহিলাদের জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে মহিলাদের ক্যান্সারের মধ্যে চতুর্থতম এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর চতুর্থতম শীর্ষ কারণ। এছাড়া, স্তন ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশে উভয় ক্ষেত্রেই শীর্ষস্থানীয় ক্যান্সার। বাংলাদেশে নারীদের মৃত্যুর প্রধানতম দুটি কারণ হলো জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও স্তন ক্যান্সার।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করছে। গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগও অনেক গবেষণা করছে। উদ্বোধন হওয়া জাতীয় জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গবেষণা কক্ষ এ গবেষণা কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হাফিজুর রহামন, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা, গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শিরিন আক্তার বেগম, অধ্যাপক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস, করোস্কোপিস্ট ডা. সাদিয়া মাহবুবা রিপা প্রমুখ।

টিআই/এসএম