বিএমইউতে লেকচার সেশন
ক্যান্সার চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে ‘পার্সোনালাইজড থেরাপি’
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) অনুষ্ঠিত এক বিশেষ লেকচার সেশনে ক্যান্সার চিকিৎসায় জেনেটিক টেস্ট ও পার্সোনালাইজড থেরাপির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। বক্তারা বলেছেন, আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে জেনেটিকস হচ্ছে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার অন্যতম হাতিয়ার। সঠিক জিনগত তথ্যের ভিত্তিতে রোগীর জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসা নির্ধারণ করে পার্সোনালাইজড থেরাপির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিএমইউর ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই বৈজ্ঞানিক আলোচনার শিরোনাম ছিল “ক্যান্সার জেনেটিক টেস্ট ও কাউন্সেলিং : ধারণা, প্রয়োগ ও ক্লিনিক্যাল ব্যাখ্যা”। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও মলিক্যুলার অনকোলজিস্ট ড. মুস্তাক ইবনে আয়ুব।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএমইউ-এর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। তিনি বলেন, “ক্যান্সার জেনেটিকস হচ্ছে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। বিএমইউ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ গবেষণা ও একাডেমিক সহযোগিতার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।”
সভাপতিত্ব করেন বিএমইউ-এর ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হুসাইন। তিনি বলেন, “ক্যান্সার এখন আর কেবল টিউমার অপসারণের বিষয় নয়—এটা জিনগত ত্রুটি, পরিবেশগত কারণ ও কোষীয় আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে চিকিৎসা নির্ধারণের সময়। আমাদের শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।”
বিজ্ঞাপন
প্রধান বক্তা ড. মুস্তাক ইবনে আয়ুব বলেন, “জেনেটিক টেস্টের মাধ্যমে নির্ধারণ করা যায়, রোগীর শরীরে কোনো ধরনের মিউটেশন রয়েছে এবং কোনো ওষুধ তার জন্য কার্যকর হবে। কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীর পরিবারকেও ঝুঁকি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানানো সম্ভব।”
এই সেশনে ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সব শিক্ষক, রেসিডেন্ট চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্নোত্তর পর্বে নানা চিকিৎসা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা তুলে ধরেন এবং পার্সোনালাইজড থেরাপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
আয়োজকরা জানান, এ ধরনের সেশন চিকিৎসা শিক্ষায় বিশেষত ক্যান্সার গবেষণা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিকিৎসার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আন্তঃবিভাগীয় ও আন্তঃপ্রতিষ্ঠান গবেষণাকে উৎসাহিত করবে।
টিআই/এসএম