ব্ল্যাক ফাঙ্গাস একটি ছত্রাক-জনিত রোগ। মিউকোরমাইকোসিস খুবই বিরল একটা সংক্রমণ। মিউকোর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত এই ছত্রাক পাওয়া যায় মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই ছত্রাক মাটি এবং বাতাসে এমনিতেই বিদ্যমান থাকে। এমনকি নাক ও সুস্থ মানুষের শ্লেষ্মার মধ্যেও এটা স্বাভাবিক সময়ে থাকতে পারে। এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের ফুসফুস যেহেতু দুর্বল থাকে, সেজন্য তাদের ক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

এই ছত্রাকের সংক্রমণ খুবই মারাত্মক যা নাক, চোখ এবং কখনও কখনও মস্তিষ্কেও আক্রমণ করে। এই ছত্রাক ইনফেকশন থেকে অন্ধত্ব, জটিল অসুখ এবং মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- বন্ধ নাক, নাক দিয়ে পানি পড়া, ব্যথা, মুখে ফোলাভাব, শুকনো কাশি, দাঁতে ব্যথা, ফুসকুড়ি, চোখে ঝাপসা দেখা, বুকে ব্যথা। এছাড়া চোখ এবং নাকের চারপাশে ব্যথা এবং লালভাব, জ্বর, মাথা ব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমিও থাকে।

এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা এইচআইভি/এইডস যাদের আছে, কিংবা কোনো রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এই মিউকোর থেকে তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এতে মৃত্যুঝুঁকিও অনেক বেশি। বলা হয়ে থাকে  মিউকোরমাইকোসিস থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা ৫০%। 

তবে ভারতে করোনা আক্রান্তদের এ ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে এটি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। সেখানকার চিকিৎসকদের ধারণা করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েডের ব্যবহার থেকে এই সংক্রমণ শুরু হতে পারে।

কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে অনেক ক্ষেত্রেই স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। আর মূলত সে কারণেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তাদের সহজের আক্রান্ত করতে পারছে।  

এ সংক্রমণ এড়াতে ধুলোবালি রয়েছে এমন জায়গায় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিফাংগাল বা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ শুরু করতে হবে।

এনএফ