ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট হাসপাতালে রোগী ভর্তি ও শয্যা পাওয়া যেন সোনার হরিণ। এজন্য শয্যার তুলনায় দ্বিগুণ রোগী ও সিট বরাদ্দে অব্যবস্থাপনার কারণ মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে হাসপাতালটিতে প্রথমবারের মতো বিভাগ ভিত্তিক শয্যা বণ্টন করে দেওয়ায় রোগীদের দুর্ভোগ কিছুটা কমবে বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (১১ আগস্ট) জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হােসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে শয্যা বণ্টন করে দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শয্যা বণ্টন কমিটির সুপারিশের আলোকে এ হাসপাতালের ৫০০ শয্যাকে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী বিভাগ ভিত্তিক সাময়িকভাবে বণ্টন করা হলাে। তবে প্রকৃত প্রয়ােজন বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ পরবর্তী যেকোনো সময়ে এই তালিকা পরিবর্তন করতে পারবেন বলেও জানানো হয়।

কোন রোগীদের কতো শয্যা

হাসপাতালটির অফিস আদেশে দেখা গেছে, সর্বোচ্চ সংখ্যক শয্যা বরাদ্দ পেয়েছে হাসপাতালটির রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ। এই বিভাগের তিনটি ইউনিটের মোট ৯২ জন রোগী ভর্তি হতে পারবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে মেডিকেল অনকোলজি বিভাগ। তাদের অধিনস্ত একটি ইউনিটের মোট ৮৯ জন রোগী ভর্তি হতে পারবে।

এছাড়াও সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের তিনটি ইউনিটের রোগীরা মোট ৭৮টি, হেমাটোলজি অনকোলজি বিভাগের একটি ইউনিটের রোগীরা মোট ৪০টি, ইএনটি (নাক কান গলা) অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ১৭টি, ওএমএফএস অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ১৩টি, প্লাস্টিকের রিকনস্ট্রাকশন বিভাগের রোগীরা ১১টি, জেনিটো ইউরো অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ১৫টি, পিডিয়াট্রিক্স অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ৪০টি, অর্থো: অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ৯টি, গাইনি অনকোলজি বিভাগের রোগীরা ৪০টি, পেলিয়েটিভ কেয়ার ইউনিটের রোগীদের জন্য ৪টি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২টি শয্যা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগে কতিপয় বিভাগের একক কর্তৃত্ব ছিল। যে কারণে কোনো বিভাগে বেশি রোগী ভর্তি হতো, আবার কোনো বিভাগের রোগীরা ভর্তিরই সুযোগ পেত না। এমনকি এক শ্রেণির দালাল চক্র এর সুযোগ নিতো। যে কারণে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এখন প্রতিটি বিভাগকে রোগীর শয্যা বণ্টন হওয়ায় অনেক সমস্যা কমে যাবে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ১০০০/১২০০ রোগী আসেন। তাদের মধ্যে ওয়ার্ড থেকে পাঠানো শয্যা খালির তালিকা অনুযায়ী রোগী ভর্তি করা হয়। বাকিরা চিকিৎসার প্রয়োজনে বাইরেই অবস্থান করে। যেহেতু করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিও খারাপের দিকে, আমাদেরকে তো অন্যান্য রোগীদের সুরক্ষার কথাও ভাবতে হবে।

বিভাগীয় পর্যায়ে এখনও বিশেষায়িত ক্যানসার হাসপাতাল তৈরি না হওয়ায় রোগীদের ঢল নামে রাজধানীর জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউটে। তবে দেশের ২৭ ধরনের ক্যানসার রোগীদের জন্য এখানে রয়েছে মাত্র  ৩০০ শয্যার হাসপাতাল। এতে চিকিৎসার নাগাল পেতে যে সময় লাগছে তার আগেই ক্যানসার ছড়িয়ে যাচ্ছে ভুক্তভোগীর শরীরে।

টিআই/জেডএস