শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও সের্গেই ল্যাভরভ, ছবি : তেহরান টাইমস

বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাশিয়াকে সহযোগিতা করতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত। পাশপাশি, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনে যে কোনো কূটনৈতিক পদক্ষেপকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আছে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের এই দেশটি।

বৃহস্পতিবার মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা ওপেক প্লাস জোটের নীতি অনুযায়ী চলতে আগ্রহী। সেই অনুযায়ী বিশ্বে জ্বালানি তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে আমিরাত। জ্বালানি তেল ও খাদ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

‘রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যে উত্তেজনা, তা প্রশমনে যে কোনো কূটনৈতিক উদ্যোগকে স্বাগত জানাবে আমিরাত। এমনকি যেসব দেশ ইতোমধ্যে কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে আমরা যুক্ত হতে চাই।’

বিশ্বে জ্বালানি তেল রপ্তানিকারী ১৪ টি দেশের জোটের নাম অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম একপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক)। রাশিয়া ওপেকের সদস্য নয়, কিন্তু ওপেক প্লাস নামের একটি চুক্তির মাধ্যমে এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছে দেশটি।

এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের সরবরাহ কমে যাওয়া ও তেলের দাম বাড়তে থাকায় বাজার স্থিতিশীল রাখতে সম্প্রতি আমিরাত ও সৌদি আরবকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুধবার সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার আগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউরোপকে রুশ জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে একটি নতুন আন্তর্জাতিক জোট করতে চায় যুক্তরাজ্য এবং সেই জোটের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রস্তাব কার্যত খারিজ করল সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি ‍আরব অবশ্য এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি; তবে দেশটির সরকারি প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সৌদি যুবরাজ মোহম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরিবর্তে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক করতে বেশি আগ্রহী।

পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শুরু হওয়া উত্তেজনা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে পৌঁছায়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।

অভিযান শুরুর দু’দিন আগেই এক বিবৃতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও পারিস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করতে চায় আমিরাতের সরকার।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ