বিশ্বের আধুনিক কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই আটকাতে পারবে না এমন নতুন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ‘সারমাত’র পরীক্ষা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মাঝেই বুধবার ছোড়া এই ক্ষেপণাস্ত্র পুরো দেশের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে পরীক্ষার স্থানে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে মস্কো।

আন্তঃমহাদেশীয় এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। এ সময় সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা পুতিনকে অস্ত্রটির ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানান।

পরে কৌশলগত এই অস্ত্র বিশ্বে আর কারও কাছে নেই এবং এটি রাশিয়াকে যারা হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাদের চিন্তার খোরাক জবাবে বলে ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা রয়েছে। এটি ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরোধী সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। পুতিন বলেছেন, বিশ্বে দ্বিতীয় কারও কাছে এই অস্ত্র নেই এবং দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আসারও সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেছেন, ‘অনন্য এই অস্ত্রটি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধের সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী, বাইরের হুমকি থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং যারা উন্মত্ত আক্রমণাত্মক বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদেরকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাদের জন্য চিন্তার খোরাক জোগাবে।’

মার্কিন কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার নতুন ভারী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত একসঙ্গে ১০ কিংবা তারও অধিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। গত কয়েক বছর ধরে রাশিয়া এই অস্ত্র তৈরির প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। যে কারণে ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা পশ্চিমের কাছে আশ্চর্যজনক নয়।

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি বলছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্লেসেৎস্ক থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং সেটি দূরপ্রাচ্যের কামচাটকা উপদ্বীপের লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, কামচাটকা উপদ্বীপের কুরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আছড়ে পড়েছে ক্ষেপণাস্ত্রটির ওয়ারহেড।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে আর-৩৬এম আর-৩৬এম২ ভোভোদা আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের বিকল্প হিসেবে সাইলো-ভিত্তিক নতুন কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র সারমাত সংযোজন করা হচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি অধিক অস্ত্রের পাশাপাশি, হাইপারসনিক গ্লাইডার ইউনিটসহ নতুন ধরনের ওয়ারহেড বহন করতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।

সূত্র: রয়টার্স, আরটি।

এসএস