মিয়ানমারে আটক প্রায় ৫০০
গ্রেপ্তারের আতঙ্ক উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে চলমান বিক্ষোভ দমাতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আটক অভিযান অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আটককৃতদের সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং অনেককে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আটকের হুমকি উপেক্ষা করে টানা বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবারও (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাস্তায় নেমে এসেছে দেশটির সাধারণ মানুষ।
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক বন্দীবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) বুধবার রাতে জানায়, রাজনৈতিক নেতা, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষসহ এ পর্যন্ত ৪৯৫ জনকে আটক করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। সংস্থাটি গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং পুলিশের হাতে আটকের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। এছাড়া অন্য একটি গ্রুপ জানিয়েছে, বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অপরাধে ইতোমধ্যেই তিনজনকে দুই বছরের এবং অপর একজনকে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে জান্তা সরকার।
সর্বশেষ কয়েকদিনে মান্দালাইয়ের আঞ্চলিক পরিবেশমন্ত্রীকে এবং রাখাইন থেকে তিন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া, চারজন ট্রেন অপারেটর এবং অন্য দুই ব্যক্তিকে অস্ত্রের মুখে উঠিয়ে নিয়ে গেছে সামরিক বাহিনী।
বিজ্ঞাপন
আলজাজিরা জানিয়েছে, অভ্যুত্থানবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় বুধবার আটজন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। এছাড়া ছয়জন সেলেব্রিটিকেও আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এএপিপি। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আটককৃতদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
লু মিন নামে মিয়ানমারের এক অভিনেতা ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, ‘জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে দেখাটা অবিশ্বাস্য! জনগণের ক্ষমতা অবশ্যই জনগণের হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে।’
এদিকে অভ্যুত্থানবিরাধেী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় কমপক্ষে ৪০ জন ব্যারিস্টারকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের দ্য ডিফেন্ড লয়্যারস’র ওয়েবসাইট। গণতন্ত্র পুনর্বহাল এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে দেশটির অনেক আইনজীবীই চলমান এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে টানা ১৩তম দিনের মতো বৃহস্পতিবারও রাস্তায় নেমে এসেছেন সাধারণ মানুষ। আলজাজিরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে মোটরসাইকেল র্যালির মাধ্যমে একদল প্রকৌশলী রাজধানী নেইপিদোর রাস্তায় সাধারণ মানুষের বিক্ষোভে যোগ দেন। এছাড়া সকাল থেকেই ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন বর্ণ ও শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সূত্র: আলজাজিরা
টিএম