আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ পাকতিয়া ও খোস্টে বুধবার ভোরে ঘটে যাওয়া ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকে নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের সমাধিস্থ করতে এই দুই প্রদেশে একের পর এক কবর খোঁড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে এ দুই প্রদেশের প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ।

আফগানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পাকতিয়া শাখার প্রধান মোহাম্মদ আমিন হুজায়ফা এএফপিকে বলেন, ‘ভূমিকম্পে এই পাকতিয়া প্রদেশেই অন্তত ১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের সমাধিস্থ করতে এখানে একের পর এক কবর খুঁড়তে হচ্ছে।’

পাকতিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এখানকার প্রায় সব বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপের ভেতর এখনও লোকজন আটকা পড়ে আছে। বৃষ্টির জন্য উদ্ধার কাজে গতি আনা যাচ্ছে না।’

পাকতিয়া প্রদেশের দুর্গম পার্বত্য অনেক অঞ্চলের হতাহতের খবর এখনও এসে পৌঁছায়নি। সেসব অঞ্চলের সংবাদ এলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন এএফপিকে জানিয়েছেন হুজায়ফা।

পাকতিয়ার এক উপজাতি নেতা ইয়াকুব মানজুর জানিয়েছেন, সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও ব্যাপকভাবে অংশ নিচ্ছেন উদ্ধার তৎপরতায়।

এএফপিকে ইয়াকুব বলেন, ‘স্থানীয় বাজার,দোকান-পাট সব বন্ধ আছে। দলে দলে মানুষ উপদ্রুত এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন।’

আফগানিস্তানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তবে পাকতিয়া ও খোস্টে বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতির যে ব্যাপকতা, সেই তুলনায় উদ্ধার তৎপরতার গতি বেশ কম। হতাহতদের সরিয়ে আনতে হাতে গোনা কয়েকটি উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারও তা স্বীকার করেছে। তালেবান মুখপাত্র আনাস হাক্কানি এ সম্পর্কে এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘সরকার তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করছে। আমরা আশা করছি, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বিশ্ব ও সহায়তা সংস্থা আমাদের জনগণের পাশে দাঁড়াবে।’

এদিকে, টুইটারে এই বার্তা টুইট করার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাড়া দিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পাল্টা এক টুইটবার্তায় জাতিসংঘের আফগানিস্তান শাখা কার্যালয় জানিয়েছে, বেশ কিছু উপদ্রুত এলাকায় ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে জাতিসংঘের আফগানিস্তান শাখার একাধিক দল।

পৃথক এক টুইটবার্তায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ দূত টমাস নিকলেসন বলেন, ‘আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতির শিকার লোকজনকে যে কোনো প্রকার সহায়তা দিতে ইইউ প্রস্তুত।’

এসএমডব্লিউ