যৌন অপরাধীদের সাজা হিসেবে রাসায়নিকভাবে খোজা করে দেওয়ার শাস্তির বিধান রেখে একটি আইন প্রবর্তন করতে যাচ্ছে থাইল্যান্ড। এ সংক্রান্ত একটি বিল দেশটির সংসদে আইনপ্রণেতাদের অনুমোদন পাওয়ায় এখন সেটি কার্যকর হওয়ার পথে আরেক ধাপ এগিয়েছে।

নতুন এই আইন কার্যকর হলে যৌন অপরাধীরা কারাদণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে ফেলার বিকল্প হিসেবে খোজাকরণ পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারবেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, যৌন অপরাধীদের সাজা সংক্রান্ত নতুন আইনটি গত মার্চে বিল আকারে সংসদের নিম্নকক্ষে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে সংসদে ১৪৫ সিনেটরের ভোটে সেটি পাস হয়েছে। তবে দু’জন সিনেটর সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন। এখন সংসদের উচ্চকক্ষে এই বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পাস হলে আইনটি কার্যকরের জন্য রাজকীয় অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

থাইল্যান্ডের সংশোধনাগার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে থাইল্যান্ডের বিভিন্ন কারাগার থেকে ১৬ হাজার ৪১৩ জন দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী মুক্তি পেয়েছেন। পরে তাদের মধ্যে অন্তত ৪ হাজার ৮৪৮ জন ফের একই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ধর্ষকের শাস্তি খোজাকরণ, নতুন আইন পাস

বিলে বলা হয়েছে, কিছু যৌন অপরাধীকে পুনরায় অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ‘ঝুঁকি’ হিসেবে বিবেচনা করে খোজাকরণের ইনজেকশন দেওয়া যেতে পারে; যা তাদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেবে। কারাদণ্ডের মেয়াদ কমানোর বিনিময়ে তারা এই বিকল্প বেছে নিতে পারবেন। তবে এতে অন্তত দু’জন চিকিৎসকের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

বিলটি অনুযায়ী, দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধীদের ১০ বছরের জন্য পর্যবেক্ষণ এবং তাদের হাতে ইলেকট্রনিক মনিটরিং ব্রেসলেট পরতে হবে।

বিলটি পাস হলে বিশ্বে রাসায়নিক খোজাকরণের শাস্তির বিধান রয়েছে এমন দেশগুলোর ছোট এক দলে নাম লেখাবে থাইল্যান্ড। আর এই দলে রয়েছে পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, এস্তোনিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য।

মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী সোমসাক থেপসুথিন বলেছেন, ‘আমি এই আইনটি দ্রুত পাস করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘আমি আর নারীদের সাথে খারাপ ঘটনার খবর দেখতে চাই না।’

তবে দেশটিতে যৌন সহিংসতা মোকাবিলায় কাজ করা বেসরকারি সংস্থা উইমেন অ্যান্ড মেন প্রোগ্রেসিভ মুভমেন্ট ফাউন্ডেশনের পরিচালক জ্যাদেদ চৌইলাই বলেন, রাসায়নিক খোজাকরণের মাধ্যমে যৌন অপরাধ মোকাবিলা করা যাবে না। কারাগারে থাকাকালীন দণ্ডপ্রাপ্তদের মানসিকতা পরিবর্তন ও পুনর্বাসন করা উচিত।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস