সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের আগে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এই দুই নেতার মধ্যে কথা হতে পারে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে একটি সূত্রের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওস জানায়, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘বিস্ফোরক প্রতিবেদন’ প্রকাশের ফলে সৌদি বাদশাহের ছেলেদের একজন (যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান) বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে পড়তে পারেন।

সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যায় যুবরাজ সালমান জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে

সব কিছু যদি ঠিক ঠাক থাকে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌদি বাদশাহ সালবান বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গে এবারই প্রথম কথা বলবন জো বাইডেন। অ্যাক্সিওসের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, উভয় নেতার মধ্যে হয়তো আরও অনেক ইস্যু নিয়ে কথা হবে, তবে খাশোগি ইস্যুটাই মূলত তাদের কথোপকথনের প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স (ডিএনআই) থেকে প্রকাশ হতে যাওয়া ওই প্রতিবেদনে সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড এবং মরদেহ ছিন্নভিন্নের দায়দায়িত্ব সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ওপর আরোপ করা হয়েছে।

সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি 

সাংবাদিক জামাল খাশোগি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি।

নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ওয়াশিংটনের সৌদি নীতিতে পরিবর্তন এনেছেন জো বাইডেন

পরে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুবরাজ সালমানের জড়িত থাকার বিষয়টি সিআইএ নিশ্চিত হয়েছে বলে সেসময় জানিয়েছিল মার্কিন গণমাধ্যমগুলো। তবে বরাবরই এই ঘটনার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন সৌদি আরবের এই ক্রাউন প্রিন্স। তবে দেশের ডি ফ্যাক্টো বা কার্যত নেতা হিসেবে এই হত্যাকাণ্ডের দায়দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

এখনও প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ফোন পাননি সৌদি বাদশাহ

উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। তবে বাইডেন এখন পর্যন্ত সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদের সঙ্গে কথা বলেননি। এমনকি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গেও বাইডেন কথা বলবেন না বলে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে।

তবে খাশোগি হত্যাকাণ্ড ও এর রিপোর্ট প্রকাশ নিয়েই হয়তো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো কথা হতে পারে বাদশাহ সালমানের। আর এতে হয়তো ফেঁসে যেতে পারেন দেশটির কার্যত শাসক ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী উচ্চাভিলাষী এক যুবরাজ।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম