দখলকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লার একটি সড়কের নাম পরিবর্তন করে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহের নামে রাখা হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে শিরিনের হত্যার তিন মাসের মাথায় বুধবার ফিলিস্তিনি-আমেরিকান এই সাংবাদিককে সম্মান জানাতে এর আয়োজন করা হয়।

গত ১১ মে পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি অভিযানের সংবাদ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন আবু আকলেহ

রামাল্লার মেয়র শিরিনের ছবি ও তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর বিবরণ সংবলিত একটি পাথরের স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচন করেন।

এ সময় রামাল্লা পৌরসভার মেয়র আহমেদ আবু লাবান বলেন, এই স্থানটি ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক বহু ঘটনার সাক্ষী। শিরিন গত দশকের দীর্ঘ সময় এই রাস্তায় হেঁটেছেন। আমরা তাকে সব সময় মনে রাখতে চাই।

>> ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় ইসরায়েল

আবু আকলেহের সহকর্মীরা বলেছিলেন, লাইভ টেলিভিশন সম্প্রচারের সময় রাস্তাটি তার অন্যতম পছন্দের ছিল।

শিরিন ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন করতে এসব স্থানে ঘুরেছেন। তাকে হত্যার পর ফিলিস্তিনিরা নবজাতক মেয়েদের তার নামে রেখেছেন।

ফিলিস্তিনে আল জাজিরার ব্যুরো প্রধান ওয়ালিদ আল-ওমারি বলেছেন, শিরিনের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ব্যাখ্যা করা কঠিন। তাকে ভালোবাসা ছাড়া তিনি আর কোনো উপায় রাখেননি।

আল-ওমারি শিরিন হত্যার বিচার নিশ্চিতের জন্য সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

>> আল-আকসায় ইহুদিদের প্রার্থনায় নিষেধাজ্ঞা বহাল আদালতের

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের তদন্ত অনুযায়ী, শিরিনকে ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক তদন্তেও একই বিষয় ফুটে উঠেছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী সাংবাদিক শিরিনকে হত্যা করেছে। কিন্তু ইসরায়েল তার হত্যার তদন্ত শুরু করেনি।

আবু আকলেহের পরিবার সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসি সফর শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দেখা করেন। শিরিন হত্যার বিষয়ে এফবিআই তদন্তের জন্য অনুরোধ করেছে তার পরিবার।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিরিনের ভাই অ্যান্টন আবু আকেলেহ বলেন, শিরিনকে হত্যা করা হয়েছে কারণ তিনি ফিলিস্তিনিদের কষ্টের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিলেন। ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে তার পরিবারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। 

তিনি বলেন, শিরিনের নামে রাস্তার নামকরণ তার ও যারা ফিলিস্তিনের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের জন্য একটি সম্মান।

আগে সড়কটির নাম ছিল সানা স্ট্রিট। রামাল্লায় রাস্তার নাম পরিবর্তন বেশ বিরল। তবে ফিলিস্তিনিরা বলছেন যে, এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের কাছে শিরিনের গুরুত্ব বুঝা যায়। 

ওএফ