জাপানের তরুণরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির। কিন্তু দেশটির সরকার নতুন একটি কর্মসূচির মাধ্যমে এই তরুণ প্রজন্মের মাঝে পরিবর্তন আনার আশা করছে। আর এই পরিবর্তনের লক্ষ্য দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, বাবা-মায়ের তুলনায় জাপানের তরুণ প্রজন্ম কম মদ্যপান করে। আর এর প্রভাব পড়েছে মদ্যপানীয় থেকে আদায় করা শুল্কে। যে কারণে দেশটির জাতীয় শুল্ক সংস্থা পুরোনো প্রবণতা ভেঙে ফেলতে জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

মদ্যপানকে আরও বেশি আকর্ষণীয় এবং অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে ‘দ্য সেইক ভাইভা!’ নামের এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশটির ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদেরকে তাদের সহকর্মীদের মাঝে জাপানি মদ্যপানীয় শোচু, হুইস্কি, বিয়ার বা মদের মধ্যে কোনটির বেশি চাহিদা রয়েছে সেবিষয়ে ব্যবসায়িক ধারণা শেয়ার করতে বলা হয়েছে।

শুল্ক কর্তৃপক্ষের এই প্রতিযোগিতা পরিচালনাকারী একটি গ্রুপ বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মানুষের মাঝে নতুন নতুন অভ্যাস গড়ে উঠেছে এবং বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মাঝে মদ্যপান হ্রাস পেয়েছে।

জাপানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষের এই আয়োজন ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অস্বাস্থ্যকর একটি অভ্যাসে লোকজনকে উৎসাহ দেওয়ার এই আয়োজন নিয়ে অনেকে সমালোচনাও করেছেন। তবে প্রতিযোগিতার জন্য অনেকে অনলাইনে অদ্ভূত ধারণাও শেয়ার করছেন।

প্রতিযোগীরা আগামী সেপ্টেম্বরের শেষের দিক পর্যন্ত তাদের ধারণা উপস্থাপন করতে পারবেন। নভেম্বরে চূড়ান্ত প্রস্তাবগুলো প্রকাশ করা হবে। পরে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় সেরা পরিকল্পনাগুলো নিয়ে ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা হবে।

এই ক্যাম্পেইনের ওয়েবসাইট বলছে, জাপানের মদ্যপানীয়র বাজার ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং দেশটিতে জন্মহার হ্রাসের পাশাপাশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও এর পেছনে উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে কাজ করছে।

দেশটির শুল্ক সংস্থার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জাপানিরা ১৯৯৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মদ্যপান কম করেছে। এক বছরে একজন জাপানি ওই বছর ১০০ লিটার মদ পান করলেও ২০২০ সালে তা কমে ৭৫ লিটার হয়েছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে মদ্যপানীয় খাত থেকে কর রাজস্বের পরিমাণও কমে গেছে।

দেশটির দৈনিক দ্য জাপান টাইমস বলছে, ১৯৮০ সালে জাপানের মোট রাজস্বের প্রায় ৫ শতাংশ আসতো মদ্যপানীয় খাত থেকে। কিন্তু ২০২০ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশে।

বিশ্ব ব্যাংক বলছে, জাপানের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ২৯ শতাংশের বয়স ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে; যা বিশ্বে একক কোনও দেশে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর হারে সর্বোচ্চ।

এসএস