ভ্লাদিভোস্টকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ হয় মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রশংসার বন্যায় ভাসালেন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেইং। বুধবার রাশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় শহর ভ্লাদিভোস্টকে ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে এক বৈঠকে তাকে কেবল ‘রাশিয়ার নয়, বরং পুরো বিশ্বের নেতা’ বলে প্রশংসা করেছেন তিনি।

মিয়ানমারের এই স্বৈরশাসক জেনারেল বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনকে নিয়ে গর্বিত। যদিও রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্টের নির্দেশে ইউক্রেনে রুশ সৈন্যদের হামলার ঘটনায় যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠন।

ভ্লাদিভোস্টকে পুতিনের সাথে বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান বলেন, আমি আপনার জন্য গর্ববোধ করি। আপনি যখন দেশটি শাসন করতে শুরু করলেন, বলা যায়— তখন থেকেই রাশিয়া বিশ্বের এক নম্বর দেশ হয়ে উঠল।

তার এই মন্তব্যের সময় প্রেসিডেন্ট পুতিনকে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানাতে দেখা যায়। এ সময় জেনারেল মিন অং হ্লেইং বলেন, এবং আমরা আপনাকে কেবল রাশিয়ার নেতা বলব না, বরং আপনি পুরো বিশ্বের নেতা। কারণ আপনি পুরো বিশ্বের স্থিতিশীলতা নিয়ন্ত্রণ ও সংগঠিত করেন।

পুতিনের সাথে বৈঠকে তাকে কেবল ‘রাশিয়ার নয়, বরং পুরো বিশ্বের নেতা’ বলে প্রশংসা করেছেন মিন অং হ্লেইং

জবাবে ভ্লাদিমির পুতিন মিয়ানমারকে দক্ষিণ এশিয়ায় রাশিয়ার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত অংশীদার বলে অভিহিত করেন। তখন জেনারেল মিন অং হ্লেইং আরও একধাপ বাড়িয়ে বলেন, আপনার দেশটিও মহান এবং ঐতিহাসিক।

‘প্রায় ৩০ বছর আগে, আপনারও কঠিন সময় ছিল, কিন্তু আপনি ইতোমধ্যে সেই সময় উতড়ে গেছেন। আপনার সহায়তায় ইতোমধ্যে রাশিয়ায় নিবিড় উন্নয়ন ঘটেছে এবং আমরা আপনার দেশের উন্নয়নের গতি পর্যবেক্ষণ করছি।’

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। 

মিয়ানমারের স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) বলেছে, গণতন্ত্রকামীদের অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে জান্তা নিয়ন্ত্রিত বাহিনী এখন পর্যন্ত ২ হাজার ২৬৭ জনকে হত্যা করেছে। এছাড়া দেশটিতে অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এক বছর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নেইপিদোর ক্ষমতায় আসা জান্তা ও গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসনের দায়ে মস্কো যখন বিশ্ব পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হয়েছে, তখন উভয় দেশের মাঝে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার আলামত দেখা যাচ্ছে।

সূত্র: দ্য মিরর।

এসএস