১৯৭৩ সালে পাতাগোনিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইভন চৌইনার্ড

বিশ্বের সামনে এখন যেসব হুমকি রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন সেগুলোর একটি। বিশ্বে ইতোমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটি মোকাবিলায় বিশ্বজুড়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখনও খুব বেশি ফল মেলেনি।

এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজের গোটা কোম্পানিটিই দান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ব্যবসায়ী। তার এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের নজর কেড়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এবং এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিজের কোম্পানি দান করা ওই ব্যবসায়ীর নাম ইভন চৌইনার্ড। তিনি আমেরিকান খুচরা ফ্যাশন ব্র্যান্ড পাতাগোনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রচেষ্টায় প্রায় ৫০ বছর আগে শুরু করা এই ব্যবসা দান করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বন্য জমি রক্ষার জন্য কাজ করছেন এমন উদ্যোগ এবং গোষ্ঠীগুলোতে সকল কর্পোরেট রাজস্ব দান করা হবে। চৌইনার্ডের পাশাপাশি তার স্ত্রী এবং দুই প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানও পোশাক কোম্পানিতে তাদের অংশীদারিত্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য দান করছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, ইভন চৌইনার্ডের দান করা কোম্পানি পাতাগোনিয়ার মূল্য প্রায় ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘পৃথিবী এখন আমাদের একমাত্র শেয়ারহোল্ডার’ শিরোনামে লেখা একটি চিঠিতে চৌইনার্ড তার সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করেছেন। বুধবার পাতাগোনিয়ার ওয়েবসাইটে চিঠিটি পোস্ট করা হয়।

সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের যদি একটি সমৃদ্ধ গ্রহের কোনো আশা থাকে তাহলে আমাদের সকলকে আমাদের যা সম্পদ আছে তা নিয়ে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এটিই আমরা করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা পরিবেশগত সংকট মোকাবিলার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি, তারপরও এটি যথেষ্ট নয়। কোম্পানির মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রেখে সংকট মোকাবিলায় আমাদের আরও অর্থ ব্যয় করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সামনে বিকল্প ছিল যে- পাতাগোনিয়া বিক্রি করা এবং সেখান থেকে পাওয়া সকল অর্থ দান করা। কিন্তু আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি যে, নতুন যে মালিক আসবে, তিনি আমাদের মূল্যবোধ বজায় রাখবে বা বিশ্বজুড়ে আমাদের লোকদের নিযুক্ত রাখবে।’

‘আরেকটি পথ ছিল, তবে তাতে বিপর্যয় হতো। সত্যি বলতে কি, এটা (দান করা) ছাড়া আর কোনো ভালো বিকল্প আমাদের সামনে ছিল না। তাই, আমরা নিজেরা এই পথ বেছে নিয়েছি।’

বেসরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পাতাগোনিয়া পারপাস ট্রাস্ট অ্যান্ড হোল্ডফাস্ট কালেক্টিভ নামে পরিচিত একটি ট্রাস্ট অলাভজনক এই সংস্থার আয়ের ওপর দৃষ্টি রাখবে এবং এখন এই স্টকের মালিক হবে।

টিএম