নিষেধাজ্ঞার বাইরেও আরও পথ আছে, সৌদি যুবরাজ ইস্যুতে হোয়াইট হাউস
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন ও দেশটির প্রকৃত নেতা মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক বলে উল্লেখ করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি। তিনি বলেন, সৌদি আরবকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও আরও অনেক কার্যকর পথ খোলা আছে।
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ‘হত্যার অনুমোদন’ দিলেও সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সময় রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’কে তিনি একথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও দেশটির প্রকৃত নেতা মোহাম্মদ বিন সালমান নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ‘হত্যার অনুমোদন’ দিয়েছিলেন বলে শুক্রবার প্রকাশিত এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের মিত্র এই দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাইডেন প্রশাসন। তবে যুবরাজ সালমানের অনুমোদনে খাশোগিকে হত্যা করা হয় বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানানো হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি দেশটি।
বিজ্ঞাপন
সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সৌদি যুবরাজের অধীনস্থ মানুষকে শাস্তি দেওয়া হলেও মূল অভিযুক্ত যুবরাজ সালমানকে যুক্তরাষ্ট্র কেন শাস্তির আওতায় নিয়ে আসছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে রোববার সিএনএনের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ অনুষ্ঠানে জেন সাকি বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা যেন আবারও না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর অনেক পথই খোলা আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ এবং দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে এর (নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার) মাধ্যমে সৌদি আরবকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এটা মূলত কূটনৈতিক কারণেই (ছাড় দেওয়া হয়েছে)।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক কূটনীতির জটিল হিসেবে নিকেশের কারণে এই (নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খাশোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমরা কোনোকিছুই গোপন রাখিনি এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে সৌদি আরবকে জবাবদিহিতায় বাধ্য করতে সরাসরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ বিষয়ে আমরা স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছি।’
সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডকে ‘ভয়ঙ্কর অপরাধ’ বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে গত শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, সব ধরনের গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতীয়মান হয়েছে যে, খাসোগিকে আটক বা হত্যা করতে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অভিযান চালানোর অনুমোদন দেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এরপরই সৌদি যুবরাজকে জবাবদিহিতায় বাধ্য করার ব্যাপারে দাবি ওঠে সারা বিশ্ব থেকে।
উল্লেখ্য, মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। ২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে দেশটির এজেন্টদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। নিজের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তুলতে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ছিলেন সৌদি সরকারের বিভিন্ন নীতি ও রাজপরিবারের কঠোর সমালোচক।
সূত্র: সিএনএন
টিএম