ছবি: এনডিটিভি

ভারতের ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কাশির সিরাপ খেয়ে কিডনি জটিলতায় ভুগে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাম্বিয়া ও ভারত।

সম্প্রতি গাম্বিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে কিডনি বিকল হয়ে ৬৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত এই শিশুদের সবার বয়স ৫ বছরের মধ্যে। গাম্বিয়ায় প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই শিশুদের মৃত্যুর জন্য মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৪টি কাশির সিরাপ দায়ী। এসব সিরাপের নাম হলো প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন বিপি, কফিক্সমেলিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ।

ইতোমধ্যে এই চার কফ সিরাপ পরীক্ষা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউেএইচও)। সেই পরীক্ষার মূল্যায়নে বলা হয়েছে, এই চারটি সিরাপের মধ্যেই ডাইথিলিন গ্রাইকল এবং এথিলিন গ্লাইকল নামের দু’টি রাসায়নিক উপাদনের অস্বাভাবিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।

মূল্যায়নে আরও বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর ফার্মেসি’ বলে যে বৈশ্বিক ভাবমূর্তি ভারতের রয়েছে, তাকে কালিমালিপ্ত করেছে এই চার সিরাপ।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই মূল্যায়নের পর গাম্বিয়ায় শুরু হয়েছে তদন্ত। এক প্রতিবেদনে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গাম্বিয়ায় ইতোমধ্যে এই কাশির সিরাপ শিশুদের না খাওয়াতে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে ওষুধের দোকান ও বাসাবাড়ি থেকে এসব কফসিরাপ জব্দ করা হচ্ছে, নেওয়া হচ্ছে শিশুদের কফের নমুনাও।

সেই সঙ্গে পৃথকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে ভারতেও। মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালের মূল কারখানা ও সদরদপ্তর ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে। রাজ্যসরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ বৃহস্পতিবার সংবাদিকদের বলেন, ‘ওই চার কাশির সিরাপের নমুনা ইতোমধ্যে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে এবং যদি (এসব নমুনায়) কোনো গণ্ডগোল শনাক্ত হয়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের দুই জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা কেন্দ্রীয় ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরির রিপোর্টের অপেক্ষায় আছেন। রিপোর্ট হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে এই চার সিরাপের বিপণন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এ সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চেয়ে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক নরেশ কুমার গয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এনডিটিভি। তিনি বলেন, ‘আমরা আজকেই শুনলাম এই ঘটনা। তারপর থেকেই কোম্পানির যাবতীয় ওষুধের বিপণন বন্ধ আছে। পাশাপাশি, কোম্পানি থেকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এসএমডব্লিউ