মিয়ানমারে আবারও গুলি, আশঙ্কাজনক ৩
মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কালে শহরে অভ্যুত্থানবিরোধীদের বিক্ষোভে আবারও গুলি চালিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। কালে ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন শহরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গ্রেনেড, গুলিতে প্রায় দুই ডজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্থানীয় মেডিক্যাল কর্মীরা জানিয়েছেন।
প্রতিবাদী জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে যখন আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন এই গুলিবর্ষণের খবর এলো।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়েছে পুলিশ। এক মাস আগে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশ শাসনের ক্ষমতা সামরিক বাহিনী ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকে প্রত্যেকদিন লাখ লাখ মানুষ জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ করে আসছেন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের পর দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কালে শহরের সমাবেশ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এই বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া মেডিক্যাল কর্মীরা বলেছেন, কালেতে মঙ্গলবার সকালের দিকে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অভিযানে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
নির্যাতনের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকরা বলেছেন, তিনজন তাজা গুলিতে আহত হয়েছেন এবং তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাজা গুলি ছোড়ার আগে পুলিশ প্রাথমিকভাবে টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া এক চিকিৎসক গুরুতর আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, আহতদের মধ্যে একজন উরুতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে তার অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। অন্য একজনের তলপেটে জখম হয়েছে। তাকে অতিরিক্ত রক্ত দিতে হয়েছে। অপর এক বিক্ষোভকারীর বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। আমরা এটা পছন্দ করি না।
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভকারীরা হাতে তৈরি শক্ত টুপি, মোটা গ্লাভস, গগলস এবং ঢাল নিয়ে জড়ো হন। দেশটির বাণিজ্যিক এই রাজধানীতে বিক্ষোভকারীরা সামরিক শাসনবিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গত ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিন ছিল গত রোববার। ওই দিন দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি চালালে অন্তত ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ইয়াঙ্গুনের একটি স্থানে গ্রেনেড, গুলি ছুড়ে পুলিশ হটিয়ে দেওয়ার আগে বিক্ষোভকারীরা ‘আমাদের নির্যাতন করা হলে বিস্ফোরণ ঘটবে’, ‘আমাদের ওপর আঘাত এলে পাল্টা আঘাত হানা হবে’ স্লোগান দেন। তবে ইয়াঙ্গুনের বিক্ষোভে পুলিশি অভিযানে কোনও হতাহত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
মায়ানিগোনে শক্ত টুপি পরিহিত এক ২৪ বছর এক বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, দেশজুড়ে উদ্বেগজনক অনুভূতি বিরাজ করছে। কেউ জানেন না কী ঘটতে যাচ্ছে।
সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান।
এসএস