কয়েক মাস আগে হঠাৎই অন্ধকার হয়ে যায় ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। ওই ঘটনার বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞদের দাবি, চীনের সাইবার হামলায় ওইদিন গোটা মুম্বাই অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। মুম্বাইয়ে চীনের এই সাইবার হামলা নিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বাইডেন প্রশাসন। খবর ডয়েচে ভেলে অনলাইনের। 

ঘটনা গত ১২ অক্টোবরের। প্রথমে বলা হয়েছিল, গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে এটা হয়েছে। কিন্তু ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক বিশেষজ্ঞ সংস্থা রেকর্ডেড ফিউচারের দাবি, চীন সরকারের মদতপুষ্ট সাইবার হামলা হয়েছিল মুম্বাইয়ে। সাইবার হামলার ফলে গ্রিড বিপর্যয় হয়। নিউইয়র্ক টাইমস এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর বিষয়টি সামনে আসে।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরপরই প্রবল হইচই শুরু হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্য ফ্রাঙ্ক পালোনে বলেছেন, বাইডেনের উচিত চীনের আচরণের নিন্দা করে ভারতের পাশে দাঁড়ানো। অভিযোগ, এটা কোনো বেসরকারি সাইবার হামলা নয়। এর পেছনে একটি রাষ্ট্রের হাত আছে। তাই এটা মানা যায় না।

এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একটি রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের ওপর সাইবার হামলা চালাচ্ছে, এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা থামানোর চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। বন্ধু দেশগুলো যাতে সাইবার হামলার শিকার না হয়, তার জন্য কাজ শুরু হয়ে গেছে বলেও দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারত সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাইলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎমন্ত্রী নীতিন রাউত জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট ঠিক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের দল তৈরি করা হয়েছে।

রেকর্ডেড ফিউচারের মুখপাত্র ভারতীয় দৈনিক দ্য হিন্দুকে জানিয়েছেন, তথ্য বলছে, এখনো কিছু সাইবার হামলার চেষ্টা হচ্ছে। তবে আগে যে হামলা হচ্ছিল, তা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে প্রায় শেষ হয়েছে। 

তিনি বলেছেন, নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টের পর ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ হয়নি। তবে রিপোর্ট প্রকাশের আগে হয়েছিল। সব টেকনিক্যাল তথ্য ভারত সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্য থেকে তারা চিহ্নিত করতে পারবে কারা সাইবার হামলা চালিয়েছিল এবং তা বন্ধ করতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিউইয়র্ক টাইমস রেকর্ডেড ফিউচারের চিফ অপারেশন্স অফিসারকে (সিওও) উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের সরকারি মদতপুষ্ট সংস্থা রেড ইকো সাইবার হামলা চালানোর মাধ্যমে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবহনের অনেক তথ্য পেয়ে যায়। তারপরই তারা মুম্বাইকে অন্ধকার করে দিয়েছিল।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রিপোর্টটিকে দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মন্তব্য করে জানিয়েছে, এই রিপোর্টের সঙ্গে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়নি। চীন বরাবর সাইবার হামলার সম্পূর্ণ বিরোধী বলে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন।

এএস