ফের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দেশটি তার পূর্ব উপকূল থেকে সমুদ্রে একটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী একথা জানিয়েছে।

কোরীয় উপদ্বীপে উচ্চমাত্রায় উত্তেজনার মধ্যে পারমাণবিক ক্ষমতাধর এই দেশটির ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সর্বশেষ ঘটনা এটি। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তের কাছে একসঙ্গে প্রায় ১০টি যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে উত্তর কোরিয়া। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে স্বল্প-পাল্লার ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়া তার নজরদারি বাড়িয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে সামরিক প্রস্তুতি বজায় রেখেছে।

অন্যদিকে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও টুইট করে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়ার সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মধ্যে এটি সর্বশেষ। উত্তর কোরিয়া বৃহস্পতিবার বলেছে, দেশটির নেতা কিম জং উন দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা তত্ত্বাবধান করেছেন । তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে তার সেনাবাহিনী পারমাণবিক হামলার সক্ষমতা সফলভাবে প্রদর্শন করেছে।

চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। যা কিনা দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বীদের উত্তর কোরিয়াকে একটি বৈধ পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসাবে গ্রহণ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া এবং আরও ভয়ঙ্কর অস্ত্র অর্জনের জন্য কিমের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, উত্তর কোরিয়া বৃহস্পতিবার রাতে তাদের সীমান্তের কাছে যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে। উত্তর কোরিয়ার বিমানগুলো আন্তঃকোরীয় সীমান্তের ১২ কিলোমিটার উত্তরে উড্ডয়ন করে। জবাবে এফ-৩৫ জেট এবং অন্যান্য যুদ্ধবিমানগুলো উড়ানো হয় বলে জানান দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ।

এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল (এনএসসি) উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য উত্তর কোরিয়ার নিন্দা করেছে। পিয়ংইয়ংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ২০১৮ সালের দ্বিপাক্ষিক সামরিক চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে দেশটি। মূলত ওই সামরিক চুক্তিতে সীমান্ত এলাকায় ‘শত্রুতামূলক কাজ’ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

রয়টার্স বলছে, গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এতে ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট উত্তর কোরিয়ার ১৫ ব্যক্তি এবং ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে দেশটি।

জেসিএস উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করার পাশাপাশি উস্কানি ও উত্তেজনা বৃদ্ধি বন্ধ করতে দেশটির প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সাংবাদিকদের বলেছেন, পিয়ংইয়ং ‘নির্বিচারে উস্কানি দিচ্ছে’।

টিএম