ফাইল ছবি

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের কাছে চিঠি লিখেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ঐতিহাসিক কংগ্রেসের আগে লেখা এই চিঠিতে তিনি বলেছেন, বেইজিং ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে যোগাযোগ, ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

রোববার (১৬ অক্টোবর) উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই তথ্য সামনে এনেছে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ঐতিহাসিক কংগ্রেস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। মূলত চীনা প্রেসিডেন্টের পাঠানো চিঠিতে অভিনন্দনের জবাব দেওয়া হয়েছে।

রোববার শুরু হচ্ছে ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস। এই কংগ্রেসেই তৃতীয় মেয়াদে আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হতে পারেন শি জিনপিং। এটিই দেশটির রাজনীতিতে সর্বোচ্চ পদ এবং এই পদে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে শি তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করতে পারেন।

রয়টার্স বলছে, কিম জং উনের কাছে পাঠানো চিঠিতে শি জিনপিং চীন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং ‘দুই দেশ ও তাদের জনগণকে অধিকতর সুখ দিতে এবং এই অঞ্চলে ও বাকি বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বড় অবদান রাখতেও নিজের ইচ্ছার কথা তিনি জানিয়েছেন’ বলে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে।

উত্তর কোরিয়া সাম্প্রতিক সময়ে রেকর্ড সংখ্যক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং ২০১৭ সালের পর থেকে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই শি জিনপিংয়ের এই অভিব্যক্তি সামনে এলো।

এছাড়া চলতি বছর রেকর্ড পরিমাণ অস্ত্র পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। যা কিনা দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বীদের উত্তর কোরিয়াকে একটি বৈধ পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসাবে গ্রহণ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া এবং আরও ভয়ঙ্কর অস্ত্র অর্জনের জন্য কিমের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে।

মূলত সিউল, টোকিও এবং ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সম্মিলিত নৌ মহড়া আরও বাড়িয়েছে। এই ঘটনা উত্তর কোরিয়াকে ক্ষুব্ধ করেছে কারণ যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ এই মহড়াকে (নিজেদের ওপর) আক্রমণের প্রস্তুতি হিসাবে দেখে পিয়ংইয়ং।

আর এসব কারণে প্রয়োজনীয় ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ হিসাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও বিস্ফোরণকে ন্যায়সঙ্গত বলে মনে করে উত্তর কোরিয়া।

সর্বশেষ গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূল থেকে সমুদ্রে একটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। কোরীয় উপদ্বীপে উচ্চমাত্রায় উত্তেজনার মধ্যে পারমাণবিক ক্ষমতাধর এই দেশটির ধারাবাহিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সর্বশেষ ঘটনা এটি। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তের কাছে একসঙ্গে প্রায় ১০টি যুদ্ধবিমান উড়ায় উত্তর কোরিয়া।

অন্যদিকে গত প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। এতে ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট উত্তর কোরিয়ার ১৫ ব্যক্তি এবং ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে দেশটি।

গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ এই পদক্ষেপ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং পরিস্থিতি বিবেচনায় উত্তেজনা রোধ করতে এবং সংলাপ পুনরায় শুরু করতে কাজ করার জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

টিএম