রাশিয়ার চুক্তি স্থগিতের পরও ইউক্রেন ছাড়ছে শস্যবাহী জাহাজ
কৃষ্ণ সাগর রপ্তানি চুক্তি থেকে রাশিয়া সরে গেলেও এই চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের বিভিন্ন বন্দর থেকে খাদ্য শস্যবাহী অন্তত তিনটি জাহাজ যাত্রা শুরু করেছে। রাশিয়া চুক্তি স্থগিতের দু’দিন পর মঙ্গলবার ওই তিন জাহাজ ইউক্রেনের বন্দর ছেড়েছে বলে জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র (জেসিসি) জানিয়েছে।
জাতিসংঘের যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র বলেছে, ইস্তাম্বুলে অবস্থিত যৌথ সমন্বয় কেন্দ্রে ইউক্রেনীয়, তুর্কি এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখার বিষয়ে রাজি হয়েছে। আর জাহাজ চলাচলের এই সিদ্ধান্ত রাশিয়ার প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
জেসিসি বলছে, খাদ্যশস্য চুক্তির সমন্বয়ক জাতিসংঘ কর্মকর্তা আমির আব্দুল্লা চুক্তির অংশগ্রহণকারী তিন সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। শস্যবাহী জাহাজের নিরাপদ চলাচলের বিষয়ে চুক্তির অন্তর্ভুক্ত সব পক্ষের পুরোমাত্রার অংশগ্রহণ নিশ্চিতের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
এর আগে, গত শনিবার অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার অভিযোগে খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেয় মস্কো। এক বিবৃতিতে মস্কো ইউক্রেনের বন্দর থেকে কৃষি পণ্য রপ্তানির চুক্তি বাস্তবায়নে রাশিয়ার অংশগ্রহণ স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায়।
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের অন্যতম দুই প্রধান খাদ্য ও জ্বালানি রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে ৮ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্য ও জ্বালানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বৈশ্বিক এই সংকটের সমাধানে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গত ২২ জুলাই কিয়েভ এবং মস্কোর কর্মকর্তারা ইউক্রেনে আটকা আড়াই কোটি টন গম ও ভুট্টা বিশ্ববাজারে সরবরাহের লক্ষ্যে তুরস্কে ওই চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তির ফলে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু হওয়ায় বৈশ্বিক খাদ্য সংকট এবং বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের দাম কমবে বলে আশা করা হয়। চুক্তির আওতায় ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির কাজ তদারকির জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র (জেসিসি) চালু করা হয়।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইউক্রেনে আটকা শস্য বহনকারী বিভিন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ যেন নিরাপদে কৃষ্ণসাগরে চলাচল করতে পারে, সেজন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় একটি যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র খোলা হয়। সেই কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে জাতিসংঘ, রাশিয়া ও তুরস্ক।
ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর বহুল আলোচিত এই চুক্তি থেকে রাশিয়ার বিদায় আট মাসের যুদ্ধে নতুন মোড় নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ সম্প্রতি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পাল্টা প্রতিরোধে দখলকৃত কিছু এলাকা থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন রুশ সৈন্যরা। রাশিয়ার অনবরত ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনের উৎপাদন সক্ষমতা ৩০ শতাংশেরও বেশি ধ্বংস হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস