গত চার বছরের কম সময়ের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ইসরায়েলিরা। মঙ্গলবারের (১ নভেম্বর) এই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে ফের ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

বুথফেরত জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফলের আগে জয়-পরাজয়ের যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিরোধীদের তুলনায় নেতানিয়াহুর ডানপন্থি ব্লক অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৯ সাল থেকে পঞ্চমবারের মতো মঙ্গলবার ইসরায়েলি নাগরিকরা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেন। গত সাড়ে ৩ বছর ধরে দেশটিকে পঙ্গু করে দেওয়া রাজনৈতিক অচলাবস্থা সমাধানের আশায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

আর এই ধরনের নির্বাচনে জয়ী হলে ইসরায়েলের রাজনীতিতে তা হবে নেতানিয়াহুর নাটকীয় প্রত্যাবর্তন। সাবেক এই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী টানা ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর গত বছর পদচ্যুত হয়েছিলেন। অবশ্য প্রথম থেকেই এই নির্বাচনকে নেতানিয়াহুর প্রত্যাবর্তনের পক্ষে বা বিপক্ষের ভোট হিসাবে ব্যাপকভাবে দেখা হয়েছিল।

এএফপি বলছে, তিনটি ইসরায়েলি নেটওয়ার্কের হিসেবে অনুযায়ী- ১২০ আসন বিশিষ্ট ইসরায়েলি পার্লামেন্ট তথা নেসেটে ৩০ থেকে ৩১টি আসন পেয়ে প্রথম স্থান লাভ করতে যাচ্ছে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি।

অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের উদারপন্থি দল ইয়েশ আতিদ নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকতে পারে। বুথফেরত জরিপ অনুসারে, এই দলটি ২২ থেকে ২৪ আসনের মধ্যে থাকতে পারে।

ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এখন দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের অধীনে আছেন। যদিও তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। তারপরও নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলের বিভক্ত রাজনীতিতে কোনও একক দল কখনোই সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। সরকার পরিচালনার জন্য জোট গঠন করা প্রয়োজন। আর তাই প্রধানমন্ত্রী পদে নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য জয়ের জন্য চরমপন্থি অতি-জাতীয়তাবাদী এবং ধর্মীয় অতি কট্টর দলগুলোর সাথে জোট প্রয়োজন হতে পারে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ১২০টি আসন রয়েছে। আর তাই কোনও দল বা জোটকে সরকার গঠন করতে হলে কমপক্ষে ৬১টি আসন পেতে হবে। আর মঙ্গলবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ভোট গণনা শেষে সরকার গঠনের জন্য ইসরায়েলি দলগুলোর হাতে প্রায় ৩ মাস সময় আছে।

এই সময়ের মধ্যে যদি তারা সরকার গঠন করতে না পারে, তাহলে ইসরায়েল ষষ্ঠ নির্বাচনের দিকে যাবে।

টিএম