কোনো পূর্বনোটিশ না দিয়ে ঢালাওভাবে ছাঁটাইয়ের অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এই প্রতিষ্ঠানের চাকরিচ্যুত কর্মীরা।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য স্যান ফ্রান্সিসকো ফেডারেল কোর্টে এই মামলা করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, গত ২৮ অক্টোবর ইলন মাস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটারের মালিকানা নেওয়ার পর এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। 

গত সপ্তাহে মাস্ক যখন টুইটারের মালিকানা নেন, সে সময় প্রতিষ্ঠানটির মোট কর্মীর সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫০০। মালিকানা নেওয়ার পরপরই টুইটারের শীর্ষ নির্বাহী পরাগ আগারওয়ালসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেন মাস্ক।

তারপর থেকেই গুঞ্জন ওঠে— কোম্পানির অর্ধেক কর্মীকেই চাকরিচ্যুত করা হবে। মালিকপক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কোন কর্মীদের চাকরি থাকবে আর কাদের থাকবে না— তা ৪ নভেম্বর, শুক্রবার সব কর্মীর দাপ্তরিক ইমেইল অ্যাকাউন্টে মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

কিন্তু মামলাকারী কর্মীদের অভিযোগ, ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা গ্রহণ করার পরের দিন থেকেই অনেকে তাদের দাপ্তরিক ইমেইল অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন তারা। তারা আরও বলেছেন, অফিসের কম্পিউটারগুলোর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করেছে কর্তৃপক্ষ; কিন্তু সব কর্মীকে সেই নতুন পাসওয়ার্ড জানানো হয়নি।

কোম্পানির ৩ হাজার ৭০০ কর্মীর বেলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার অভিযোগপত্রে।

টুইটারকর্মীদের আইনজীবী শ্যানন লিস-রিওর্ডান মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প আইন অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির কর্তৃপক্ষ যদি ব্যাপকহারে কর্মী ছাঁটাই করতে চায়, সেক্ষেত্রে তা শুরু করার অন্তত ৬০ দিন আগে নোটিশ জারির মাধ্যমে তা কর্মীদের জানাতে হয়; কিন্তু টুইটার কর্তৃপক্ষ সেই আইন তোয়াক্কা করেনি।

ব্লুমবার্গকে শ্যানন লিস রিওর্ডান বলেন, ‘এই মামলার মাধ্যমে আমরা টুইটার কর্তৃপক্ষকে এই বার্তা দিতে চাই—বঞ্চনার শিকার হওয়া কর্মীরা তাদের ন্যায্য ও আইনসম্মত অধিকার ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।’

এ সম্পর্কে আরও অধিকতর তথ্য জানতে টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ব্লুমবার্গ, কিন্তু কোনো কর্মকর্তাই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে অবশ্য এ ধরণের মামলা নতুন নয়। চলতি বছর জুন মাসেই মাস্কের মালিকানাধীন আরেক কোম্পানি টেসলা কোম্পানির বেশ কয়েকজন কর্মী একই অভিযোগে টেক্সাসের অস্টিন জেলা আদালতে মামলা করেছিল তার বিরুদ্ধে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, টেসলা কর্তৃপক্ষ কোনো পূর্বনোটিশ জারি না করেই কোম্পানির ১০ শতাংশ জনবল ছাঁটাই করেছে। মামলার রায়ে বিচারক টেসলা কর্তৃপক্ষকে কর্মীদের সঙ্গে যাবতীয় গণ্ডগোল মিটমাট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

কাকতালীয়ভাবে সেই মামলাতেও বাদি অর্থাৎ কর্মীদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন শ্যানন লিস-রিউডার্ন।

‘আমরা এখন দেখব, তিনি (ইলন মাস্ক) আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেন কিনা,’ ব্লুমবার্গকে বলেন শ্যানন।

এসএমডব্লিউ