আস্থা ভোটে টিকে গেলেন ইমরান খান
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পাকিস্তান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হারালেও নিম্নকক্ষে জাতীয় পরিষদের আস্থা ভোটে উতরে গেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
শনিবারের আস্থা ভোটে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ৩৪২ ভোটের মধ্যে ১৭৮ ভোট পেয়েছেন ইমরান খান। জয়ের জন্য তার প্রয়োজন ছিল ১৭২ ভোট।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ক এক বিবৃতিতে শনিবার পাকিস্তানের নিম্নকক্ষের স্পিকার আসাদ কায়সার বলেন, ‘ইমরান খান জাতীয় পরিষদের আস্থাভোটে জয়ী হয়েছেন। সুতরাং জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভূমিকা পালনে আইনগত কোনও বাধা আর তার সামনে নেই।’
পাকিস্তানের উচ্চকক্ষ সিনেটের আসনসংখ্যা ৯৬। সিনেট সদস্যরা ৬ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তিন বছর পরপর সিনেটের অর্ধেক আসনে নির্বাচন হয়। প্রাদেশিক আইনসভা ও জাতীয় পরিষদের সদস্যদের পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন সিনেট সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
গত বুধবার সিনেটের ৪৮ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পাকিস্তানের বর্তমান অর্থমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রার্থী আব্দুল হাফিজ শেখ তার প্রতিপক্ষ দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী ইউসুফ রাজা গিলানির কাছে হেরে যান।
অবশ্য তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে উভয়ের মধ্যে। কারণ, দিনশেষে ফলাফল ঘোষণার সময় দেখা গেছে— ইউসুফ রাজা গিলানি পেয়েছেন ১৬৯ ভোট আর হাফিজ শেখ পেয়েছেন ১৬৪ ভোট।
তবে নির্বাচনের এ ফলাফলে বড় ধাক্কা খেয়েছে ইমরান খানের পিটিআই ও জোটের শরিকেরা। কারণ, বর্তমানে জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে আছেন ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই ও তার জোট সঙ্গীরা। এ কারণে সিনেট নির্বাচনে হাফিজ শেখের জয় একরকম নিশ্চিত বলেই ধরা হয়েছিল।
কিন্তু তা না হওয়ায় ভোটে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন পিটিআই শীর্ষ নেতা ইমরান খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পরপরই এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআইয়ের অন্যতম নেতা ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশী বলেন, ইমরান খান ও পিটিআই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পরিষদে আস্থা ভোটে অংশ নেবেন। সেখানেই স্পষ্ট হবে কারা তার পক্ষে এবং কারা তার বিরোধী।
সেই অনুযায়ীই শনিবার জাতীয় পরিষদে আস্থা ভোট হলো। পাকিস্তান পার্লামেন্টের ১০ বিরোধী দলের জোট পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের(পিডিএম) শুক্রবারই এই ভোট বর্জন করেছিল। এ কারণে শনিবার জাতীয় পরিষদে উপস্থিত ছিলেন অল্প কয়েকজন বিরোধী দলীয় আইন প্রণেতা, যারা পিডিএমের সঙ্গে যুক্ত নন।
কাতারভিত্তিক সাংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, সিনেট নির্বাচনে পরাজয়ের পর এই জয়ের মাধ্যমে পাকিস্তান পার্লামেন্টে আবারও নিজের অবস্থান সুসংহত করলেন ইমরান খান।
তবে সিনেট নির্বাচনে দুর্নীতির যে অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী, সেই অভিযোগে অটল আছেন তিনি। আস্থা ভোটে জয়ের পর এক বার্তায় তিনি বলেন, সর্বশেষ সিনেট নির্বাচনে কোনও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ