ফাইল ছবি

মিয়ানমারের প্রায় ৬ হাজার বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করেছে দেশটির জান্তা সরকার। সাধারণ ক্ষমা পাওয়া বন্দিদের মধ্যে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির সাবেক একজন উপদেষ্টাও রয়েছেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক এসব বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করে সামরিক নেতারা। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় ছুটির দিন উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ান অর্থনীতিবিদ এবং গণতন্ত্রের আইকন অং সান সু চির সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টার্নেলসহ প্রায় ৬ হাজার বন্দির সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করা হয়েছে বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার জানিয়েছে।

রয়টার্স বলছে, সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুরের ফলে মুক্তি পেতে যাওয়া বন্দিদের মধ্যে সাবেক ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ভিকি বোম্যান এবং তার স্বামী রয়েছেন। এছাড়া বৃহস্পতিবারের এই ঘোষণার ফলে মার্কিন নাগরিক কিয়াও হতে ওও এবং জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা তোরু কুবোতাও মুক্তি পাচ্ছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। সেসময় অভ্যুত্থানের পরপরই চালানো অভিযানে অং সান সু চি-সহ বেসামরিক নেতাদের গ্রেপ্তার করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, সরকার টার্নেলের মুক্তি সম্পর্কিত প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে। মূলত অস্ট্রেলীয় এই অর্থনীতিবিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় এবং গত সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের আদালতে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল।

পেনি ওং টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘অধ্যাপক টার্নেল আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হিসাবেই থাকবেন। তবে আপাতত এই পর্যায়ে আমরা আর কোনও মন্তব্য করব না।’

এছাড়া জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুবোতার মুক্তির বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে।

মূলত মিয়ানমারের জাতীয় দিবস উপলক্ষে ৫ হাজার ৯৮ জন পুরুষ এবং ৬৭৬ জন নারী বন্দিকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া সবগুলো মামলায় যদি সু চি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হতে পারে। রাজধানী নেইপিদোর রুদ্ধদ্বার আদালতে সু চির বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে।

গত সেপ্টেম্বরে শন টার্নেলের সঙ্গে সু চিকেও ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

টিএম