লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির

কয়েক সপ্তাহের তীব্র জল্পনা-কল্পনা ও গুজবের পর পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান নিযুক্ত হয়েছেন আসিম মুনির। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে এই পদে বেছে নেন।

সবকিছু ঠিক থাকলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার স্থলাভিষিক্ত হবেন। তবে তার আগে শেহবাজের এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভির কাছ থেকে অনুমোদিত হতে হবে।

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন। এতে বলা হয়েছে, নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বেছে নিলেও তার এই সিদ্ধান্ত এখন প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনিরকে একজন অসাধারণ সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে প্রযুক্তিগত বিষয়ে জড়িত থাকার কারণে আগেই মনে করা হয়েছিল, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম নতুন সেনাপ্রধান হওয়ার দৌড়ে ডার্ক হর্স হতে পারেন।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আসিম মুনির দুই তারকা জেনারেলের পদে উন্নীত হন। কিন্তু তিনি দুই মাস পরে সেই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। একইভাবে সামরিক বাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসাবে তার চার বছরের মেয়াদ আগামী ২৭ নভেম্বর শেষ হবে।

আর এই একই সময়ে সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির বর্তমান চেয়ারম্যান জেনারেল নাদিম রাজা এবং সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া তাদের সামরিক ইউনিফর্ম খুলে ফেলবেন। অর্থাৎ অবসরে যাবেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুনির পাকিস্তানের মংলায় অফিসার্স ট্রেনিং স্কুল প্রোগ্রামের মাধ্যমে চাকরিতে প্রবেশ করেন এবং ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। তিনি বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।

এছাড়া বিদায়ী সেনাপ্রধানের অধীনে একজন ব্রিগেডিয়ার হিসেবে ফোর্স কমান্ড নর্দার্ন এরিয়াতে সৈন্যদের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আসিম মুনির।

দ্য ডন বলছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুনির পরবর্তীতে ২০১৭ সালের শুরুতে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা মহাপরিচালক নিযুক্ত হন এবং পরের বছর অক্টোবরে তাকে আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

যাইহোক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসাবে আসিম মুনিরের কার্যকাল সর্বকালের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হিসেবে রয়ে গেছে। মূলত এই পদে আসার আট মাসের মাথায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চাপে তাকে শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরে তাকে গুজরানওয়ালা কর্পস কমান্ডার হিসাবে নিয়োগ করা হয়। এই পদে তিনি দুই বছর ধরে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এরপর পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসাবে স্থানান্তরিত হন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির।

টিএম