ছবি : স্পুটনিক

শ্বাসতন্ত্রের প্রাণঘাতী রোগ করোনার উল্লম্ফণ শুরু হয়েছে চীনে। বুধবার বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩১ হাজার ৪৫৪ জন।

চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ ব্যুরোর (এনএইচবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর গত আড়াই বছরে সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ হয়েছে বুধবার।

এর আগে গত এপ্রিলের মাঝামাঝি চীনে একদিনে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছিলেন ২৯ হাজার ৩৯০ জন। বুধবারের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড।

১৪০ কোটি মানুষ অধ্যুষিত চীনে দৈনিক আক্রান্তের এই সংখ্যা অবশ্য একেবারেই নগন্য; কিন্তু দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার কঠোর ‘জিরো-কোভিড’ নীতি নেওয়ায় এই নগন্য সংখ্যাটিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই নীতির আওতায় কোনো শহরে মাত্র কয়েকজন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হলে গোটা শহরটিতেই লকডাউন জারি করা হচ্ছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।

তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।

মহামারির শুরু দিকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চীনও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, ব্যাপক টেস্টিং, ভ্রমণ বিধিনিষেধ, করোনা টিকা ও মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করাসহ কঠোর সব করোনা বিধি চালু করে। চলতি বছরের শুরু থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশে কঠোর করোনা বিধি থেকে সরে এলেও চীন এখনও সেসব জারি রেখেছে।

এদিকে সরকারের ‘জিরো কোভিড’ নীতির জেরে গত প্রায় তিন বছর যাবৎ চীনের জনগণ একদিকে যেমন স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দিনের পর দিন লকডাউন ও কোয়ারেন্টাইনের ফলে কর্মসংস্থান হারিয়ে বহু মানুষ চরম আর্থিক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

সম্প্রতি চীনের বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।